সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যায় অভিযুক্ত মিয়ানমারের প্রশংসা করেছেন টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যাক ডোরসে। দেশটির পর্যটন খাতের বিজ্ঞাপন দিয়ে সেখানকার মানুষের প্রশংসা করেন তিনি। আর এতেই বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন উপেক্ষা করে পর পর কয়েকটি টুইটে জ্যাক ডোরসে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে তার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা লেখেন। গত মাসে মেডিটেশনের জন্য মিয়ানমার ভ্রমণ করেন বলে জানান তিনি।
ডোরসে তার ৪০ লাখ অনুসারীকে মিয়ানমার ভ্রমণের পরামর্শ দিয়ে লেখেন, ‘দেশটি খুবই সুন্দর। সেখানে লোকজন দারুণ আনন্দে থাকে এবং খাবারও অসাধারণ। আমি দেশটির রেঙ্গুন, মানদালাই ও বেগান নগরী ভ্রমণ করেছি।’
ডোরসের টুইটের সমালোচনায় তার অনুরাগীদের অনেকেই ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিক্রিয়ায় রিটুইট করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘বিশেষ করে এই সময়ে বিনা পয়সায় তাদের (মিয়ানমার) জন্য পর্যটনের বিজ্ঞাপন করা নিন্দনীয়।’
সমসাময়িক ঘটনাবলীকে অবজ্ঞা করা এবং কোন সময়ে কোন কথাটা বলা ঠিক বা ভুল সে কাণ্ডজ্ঞান ডোরসের নেই বলেও মন্তব্য করেন আরেকজন।
আরেক টুইটার ব্যবহারকারী লেখেন, ‘তিনি অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি কি তার সাইটে পোস্ট হওয়া খবর আর প্রতিবাদগুলোও দেখেন না।’
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া কাতারের সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিনিধি মোহাম্মদ জামজুম বলেন, ডোরসের টুইট দেখে তিনি ‘একেবারেই বাকরুদ্ধ’।
অপরজন লিখেন, ‘সামাজিক মাধ্যমটি গণহত্যা বাড়িয়ে তুলছে। আর এর মধ্যেই জ্যাক ডোরসে গর্বিতভাবে তার চমৎকার ছুটি কাটানোর বিবরণ দিচ্ছেন।’
তবে এখন পর্যন্ত এসব সমালোচনার কোনো জবাব দেননি টুইটার প্রতিষ্ঠাতা।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন-নিপীড়ন শুরুর পর সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ একে ‘জাতিগত নিধন’ আখ্যা দিয়ে মিয়ানমারের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ একাধিক মিলিটারি সদস্যদের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণও নিষিদ্ধ করেছে একাধিক রাষ্ট্র। এ ছাড়া দেশটির নেত্রী আং সান সু চি’র একাধিক সম্মাননা বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ডরসের এমন টুইট অনেকটাই বিতর্কের সৃষ্টি করলো।