আজকের বাংলা তারিখ
  • আজ বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
  • ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১১:৫১

ইয়েমেনে ক্ষুধার সঙ্গে শিশুদের যুদ্ধ

যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ছয় বছরের শিশু সালেম ইসা। তার হাড়জিরজিরে কায়া দেখে মনে হয় বয়সটা আরও কম। চিকিৎসার জন্য অভিভাবকেরা তাকে ভর্তি করেছেন ইয়েমেনের সানায় অবস্থিত সরকারি থাওরা হাসপাতালে। শুধু ইসা নয়, তার মতো লিকলিকে হাত-পা নিয়ে অনেক শিশু ভর্তি হয়েছে ওই হাসপাতালে। সঙ্গে অভিভাবকদের ভিড়। এই শিশুরা দেশটিতে চলা গৃহযুদ্ধের সরাসরি কুফল ভোগ করছে বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
থাওরা হাসপাতালে আগে মাসে গড়ে এমন ১০ থেকে ২০ জন শিশুর আগমন ঘটত। কয়েক মাসে তা বেড়ে গেছে। এখন প্রতি মাসে গড়ে ১২০ জন শিশুকে নিয়ে আসা হয়।
হাসপাতালে ইসার মা বলছিলেন, ‘আমি সাধারণত তাকে বিস্কুট খাওয়াই। কিন্তু সে খুবই দুর্বল। সে কিছুই খেতে পারছে না।’ অগত্যা তিনি সন্তানকে বাঁচাতে এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।
এমন শিশুদের দেখা যে শুধু থাওরা হাসপাতালে মিলছে, এমন নয়। আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের দরিদ্র এই দেশের বিভিন্ন স্থানের হাসপাতালে ক্রমে এমন শিশুদের ভিড় বাড়ছে। হোদেইদা নামের একটি শহরের এক হাসপাতাল পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে জাতিসংঘের মানবকল্যাণ সহায়তাপ্রধান স্টিফেন ও’ব্যারেন বলেন, ছোট শিশুরা চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।

তবে কি দেশটিতে দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছে? এ ব্যাপারে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত কয়েক মাসের গৃহযুদ্ধ ও সরকার বন্দর আটকে রাখার কারণে দেশটিতে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হচ্ছে।

জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেনের মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছে। এই সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা।

ইউনিসেফের মতে, চরম অপুষ্টিতে ভুগে ৩ লাখ ৭০ হাজার শিশুর সুষ্ঠু বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ১৫ লাখ শিশু ক্ষুধার্ত থেকে যাচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যার সৃষ্টি করবে। দেশটির পাঁচ বছরের কমবয়সী অর্ধেকের বেশি শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।

ইয়েমেনে শিশুদের ভবিষ্যৎ এমন হুমকির মুখে পড়ার পেছনে সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী হুতিদের গৃহযুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। দেশটির সৌদি জোট-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি দেশটির হুতি বিদ্রোহীদের দমাতে তাদের অধ্যুষিত এলাকায় বন্দর অবরোধ আরোপ করেছেন। এ ছাড়া ইরানের সমর্থন পাওয়া হুতি বিদ্রোহীদের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে চাপে ফেলতে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাপারে কিছু পরিবর্তন এনেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদর দপ্তর রাজধানী সানা থেকে সরিয়ে এডেনে নিয়ে গেছেন। কারণ, সানা এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া তিনি নতুন একজন গভর্নর নিয়োগ করেছেন। আর নতুন গভর্নর ঘোষণা দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে কোনো অর্থ নেই। এটি দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মনে আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছে। নগদ অর্থের সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইয়েমেনের অর্থনৈতিক বিশ্লেষক আমল নাসের বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ে প্রেসিডেন্ট হাদির এমন সিদ্ধান্তের ফলে ১০ লাখেরও বেশি চাকরিজীবী বেতন পাননি। সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ হয়তো দীর্ঘ মেয়াদে হুতিদের চাপে ফেলবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

সরকারের এমন নীতির সমালোচনা করে অক্সফামের মানবকল্যাণ নীতি-বিষয়ক উপদেষ্টা রিচার্ড স্ট্যানফোর্থ বলেন, প্রতিপক্ষকে দমন করতে গিয়ে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে হাতিয়ার বানিয়ে ফেলেছে। আর এর ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য দেশটির অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জরুরি ত্রাণ সহায়তা ছাড়া আর কোনো বিকল্প দেখছেন না ইয়েমেনের সামাজিক উন্নয়ন তহবিলের ইব্রাহিম মাহমুদ। তিনি মনে করেন, এ দুটি পদক্ষেপই পারে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে দেশটিকে রক্ষা করতে। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে।

MY SOFT IT Wordpress Plugin Development

Covid 19 latest update

# Cases Deaths Recovered
World 0 0 0
Bangladesh 0 0 0
Data Source: worldometers.info

Related News

সানির ব্যাটারি বিপ্লব

সানি সানওয়ার কাজ করেন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ নিয়ে। স্বপ্ন দেখেন কার্বন নিঃসরণমুক্ত বিদ্যুৎ–ব্যবস্থার। ...

বিস্তারিত

অনলাইনে ব্যবসা করতে চান?

ধরুন আপনার অসাধারণ কিছু প্রোডাক্ট আছে। খুব সুন্দর করে কন্টেন্ট তৈরী করে নিজের ওয়েবসাইট সাজিয়েছেন। পণ্যের ছবি ...

বিস্তারিত

হলোগ্রাফি এবং পদার্থবিজ্ঞানের মেসি

আজকে যে বিষয়টা দিয়ে আলোচনা শুরু করতে চাই, সেই ধারণাটার জন্ম স্ট্রিং তত্ত্ব থেকে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এর ...

বিস্তারিত

ফেসবুক ছাড়ার বার্ষিক গড় মূল্য ১ হাজার ডলার

ফেসবুক ব্যবহারের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি প্রায় সবাই জানেন। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্যের ...

বিস্তারিত