এমসিকিউ অংশের নম্বর কমানোর সিদ্ধান্ত বহাল
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নম্বর বণ্টনে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সৃজনশীলে সাতটি প্রশ্নই থাকছে। সৃজনশীলে ছয়টির স্থলে সাতটি প্রশ্নের মাধ্যমে ১০ নম্বর বাড়িয়ে ও এমসিকিউতে ১০ নম্বর কমিয়ে সময় বিভাজনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না।
রবিবার সচিবালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় নির্ধারণে দেশের শিক্ষাবিদদের নিয়ে গঠিত পরামর্শক কমিটির সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান।
প্রসঙ্গত, এসএসসি, দাখিল, এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার সময় ও নম্বর নতুন করে বিভাজন করে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ-কমিটি। এ বিভাজন অনুযায়ী ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৩০টি বহু নির্বাচনী প্রশ্নের (এমসিকিউ) উত্তরের জন্য সময় বরাদ্দ করা হয় ৩০ মিনিট। আগে এক্ষেত্রে ৪০টি প্রশ্নের জন্য ৪০ মিনিট ছিল। অপরদিকে নতুন নিয়মে সৃজনশীল অংশে ছয়টির স্থলে সাতটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। আগে ৬টি প্রশ্নের জন্য এ সময় ছিল ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট। এ সিদ্ধান্ত ২০১৭ সাল থেকে কার্যকর হবে।
প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা ২০১৫ সালে সিদ্ধান্ত নেই, এটা ২০১৭ সাল থেকে পরিবর্তনের ঘোষণা দেই। দুই বছর আগে কেউ এটার বিষয়ে বলেননি।
তিনি বলেন, টেস্ট পরীক্ষাও নতুন নিয়মে হবে। এসএসসি ও এইচএসসির চূড়ান্ত পরীক্ষার সময় পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট আগে খাতা দেব। যাতে পরীক্ষার মূল টাইমটা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেখানে দেখা গেছে অনেকগুলো বৃত্ত ভরাট করতে হয়। এতে বেশ সময় লাগে।
তিনি আরো বলেন, পরীক্ষা মাঝখানে ১০ মিনিট সময় বন্ধ রেখে খাতা দেওয়া ও নেওয়া হত, এটা এখন আর হবে না। শিক্ষকরা একহাতে নতুন খাতা দেবেন আরেক হাতে এমসিকিউ’র উত্তরটা নিয়ে নেবেন। ওখানে এক মিনিটও নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।
মন্ত্রী বলেন, আগে সৃজনশীল ৯টি প্রশ্নের মধ্যে ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হত। এখন ১১টি প্রশ্নের মধ্যে সাতটি বাছাই করতে হবে। অপশনটা বেশি পাচ্ছে। এছাড়া ৭৫ নম্বরের ক্ষেত্রে ছয়টি প্রশ্নের মধ্যে চারটি বাছাই করতে হত। এখন আটটি প্রশ্ন থেকে পাঁচটি বাছাই করতে হবে। অপশনটা বেড়ে যাচ্ছে।
এছাড়া আগে ১০০ নম্বরের মধ্যে প্রতি প্রশ্নের জন্য নির্ধারিত ছিল ২১ মিনিট ৪০ সেকেন্ড। এখন সময় পাবে ২১ মিনিট ২৬ সেকেন্ড। মাত্র কয়েক ১৪ সেকেন্ডের পার্থক্য। এটা নিয়ে খুব একটা আপত্তির কারণ নেই। ৭৫ নম্বরের পরীক্ষায় আগে প্রতি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ছিল ৩২ মিনিট ৩০ সেকেন্ড এখন হচ্ছে ৩১ মিনিট।
পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার আনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর প্রধান কারণ হবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন পরীক্ষাকে চাপ মনে না করে। সহজে যাতে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। পাঠ্যপুস্তকও সেই রকম হবে, পড়নোও সে রকম হবে।
সভায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Like this:
Like Loading...