কোরান-হাদিসের আলোকে ধনী হওয়ার উপায় কী?
অর্থ-বিত্ত বিলাসিতা মানুষের সহজাত চাহিদা। পৃথিবীতে এমন মানুষের সন্ধান নেই বলরেই চললে, একটু ভালো, একটু আভিজাত্যের সাথে জীবন যাপণ করতে চায়। ইসলামও কিন্তু এই আভিজাত্য বা বিলাসিতার বিরোধীতা করেনি। ধন-সম্পদ উপার্জন করার এবং সে ধন-সম্পদ ব্যয় করে ভালোভাবে জীবন যাপণ করার ব্যাপারে ইসলামি কোনো বিধি নিষেধ নেই।
ইসলাম শুধু বলেছে, হালালভাবে বৈধ পন্থায় ধন-সম্পদ উপার্জন করতে হবে। ইসলাম মানুষকে ধনী হওয়ার সহজ কিছু পথ ও উপায় বাতিয়েছে। বিবাহ ধনী হওয়ার একটা সহজ ও ইসলাম প্রদত্ত একটি অন্যতম উপায়। আল্লাহ্ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ওয়াদা করেছেন যে, বিবাহ করলে তিনি নিজ অনুগ্রহে তাকে ধনী করে দেবেন।
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَأَنْكِحُوا الْأَيَامَى مِنْكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِنْ يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
অর্থাৎ তোমাদের মধ্যকার যারা বিবাহবিহীন আছে এবং দাস-দাসীদের মধ্যে যারা নেককার তাদের বিবাহ দিয়ে দাও। যদি তারা অভাবগ্রস্থ থাকে আল্লাহ তায়ালা নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে ধনী করে দিবেন। আর আল্লাহ তায়ালা প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ। (সুরা নূর, আয়াত: ৩২)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বিবাহ দিতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং স্বাধীন ও গোলামদেরকে তার (বিবাহ করতে) আদেশ দিয়েছেন এবং এর বদৌলতে তাদেরকে ধনাঢ্যতার ওয়াদা করেছেন। এরপর তিনি উপরোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করলেন।
সাঈদ ইবনে আব্দুল আযীয (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার কাছে খবর এসেছে, হযরত আবু বকর (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্ তায়ালা তোমাদেরকে বিবাহের ব্যাপারে যে নির্দেশ দিয়েছেন তা পালন কর। তাহলে তিনি তোমাদেরকে ধন্যাঢ্যতার যে ওয়াদা দিয়েছেন তা পূর্ণ করে দেবেন। এরপর তিনি উপরোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করলেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছেন, তোমরা বিবাহের মাধ্যমে ধনী হওয়ার রাস্তা খুজে নাও। আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন,
إِنْ يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ
অর্থাৎ, যদি তারা অভাবী থাকে আল্লাহ তায়ালা নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে ধনী করে দেবেন। (তাফসীরে ইবনে কাসিরঃ ৬/৫১)
রাসুল (সা.) বলেছেন,
ثَلَاثَةٌ حَقٌّ عَلَى اللَّهِ عَوْنُهُمْ: المُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، وَالمُكَاتَبُ الَّذِي يُرِيدُ الأَدَاءَ، وَالنَّاكِحُ الَّذِي يُرِيدُ العَفَافَ
অর্থাৎ, তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ তায়ালার জন্য কর্তব্য হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় জিহাদকারী, চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায় এবং ওই বিবাহিত ব্যক্তি যে (বিবাহ করার মাধ্যমে) পবিত্র থাকতে চায়। (তিরমিজি-১৬৫৫, নাসায়ি-৩২১৮, ৩১২০, সহিহ ইবনে হিব্বান-৪০৩০, বায়হাকি, সুনানুল কুবরা-১৩৪৫৬,২১৬১২; হাদিসটি হাসান) অতএব, মুসলিম অমুসলিম সকল অবিবাহিত ভাইবোনদের ভাবার সময় এসেছে; তারাই চিন্তা করবেন যে, তারা কখন বিবাহ করবেন?
মাওলানা মিরাজ রহমান
Like this:
Like Loading...