প্রায় তিন বছর আগে কানাডা থেকে দেশে আসে তামিম আহমেদ চৌধুরী। এরপর গত দুই বছরে জেএমবির বেশ কয়েকটি হত্যা ও হামলার ঘটনায় তার নাম উঠে আসে। তবে গুলশান হামলার আগে তার ব্যাপারে বেশি কিছু জানতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলার ‘মূল হোতা’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানডীয় নাগরিক তামিম চৌধুরীকে ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, ‘তামিম চৌধুরী গুলশান হামলার আগে দেশেই ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, হামলার পরে সে বিদেশে চলে যেতে পারে, যেহেতু জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) অর্থায়ন বিদেশ থেকেই হয়।’
মেজর জিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জিয়া আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের (এবিটি) সমন্বয়কের কাজ করেছে। জিয়াও দেশের বাইরে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।’
পুলিশের তদন্ত ও স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রাম সাদিমাপুরের প্রয়াত আবদুল মজিদ চৌধুরীর নাতি তামিম। আবদুল মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তামিমের বাবা শফিক আহমেদ চৌধুরী জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি পরিবার নিয়ে কানাডায় চলে যান। পরিবারের সঙ্গে কানাডার উইন্ডসরে থাকতেন তামিম। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর তিনি ইত্তেহাদ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আসেন। এর পর থেকে নিখোঁজ। মূলত দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি জেএমবিকে নতুন করে সংগঠিত করতে শুরু করেন। জেএমবির নতুন এই ধারাটি হয়ে ওঠে অনেক বেশি শক্তিশালী ও ধ্বংসাত্মক। গত দুই বছরে ঢাকা, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে জেএমবিকে হত্যা ও হামলার মিশনে নামতে দেখা যায়। এভাবে বেশ কয়েকটি ‘সফল’ অভিযানের পর তারা গুলশানের রেস্তোরাঁয় হামলার মতো বড় পরিকল্পনা করে।
কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সময় আহত অবস্থায় গ্রেফতার রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, জাহাজ বিল্ডিং নামে পরিচিত তাজ মঞ্জিলের আস্তানায় অন্য ‘বড় ভাই’দের পাশাপাশি নিয়মিত যেতেন তামিম আহমেদ চৌধুরী। অভিযানে নিহত জঙ্গিদের তিনি প্রশিক্ষণ দিতেন। আর্থিকভাবে সহায়তাও করতেন।
এদিকে পুলিশ তামিমকে জেএমবি নেতা বললেও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনায় দাবি করা হয়, তিনি সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক। এর ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও তাকে আইএস সমন্বয়ক হিসেবে উল্লেখ করেছে।
কে এই মেজর জিয়া
জিয়ার পুরো নাম সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক। তার বাবার নাম সৈয়দ মোহাম্মদ জিল্লুল হক। তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের মোস্তফাপুরে। সর্বশেষ তিনি মিরপুর সেনানিবাসে থাকতেন।
আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) আধ্যাত্মিক নেতা জসীমুদ্দিন রাহমানীকে গ্রেফতারের পর এবিটির শীর্ষ সংগঠক, সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হকের নাম জানতে পারেন গোয়েন্দারা। দেশে ব্লগার, প্রকাশক, মুক্তমনা লেখকসহ অন্তত নয়জনকে টার্গেট করে হত্যার নেপথ্যে ছিলেন মেজর জিয়া। আরও কয়েকজনকে হত্যাচেষ্টা পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। গোয়েন্দাদের ধারণা, আশপাশের দেশের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গেও তার যোগাযোগ রয়েছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার পাশাপাশি সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গুপ্তহত্যাসহ নানা পরিকল্পনার নেপথ্যে রয়েছেন তিনি। গত তিন বছরে তার তত্ত্বাবধানে এবিটির অন্তত আটটি স্লিপার সেল তৈরি হয়েছে। প্রতিটি সেলের সদস্য সংখ্যা চার থেকে পাঁচজন। সেই হিসাবে অন্তত ৩০ জন দুর্ধর্ষ ‘স্লিপার কিলার’ জঙ্গি তৈরি করেছেন মেজর জিয়া। তারাই ব্লগার, প্রকাশক, মুক্তমনা ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের হত্যা করেছে।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম এই মেজর জিয়া। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গত পাঁচ বছর পলাতক থেকে তিনি দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিস্তারে অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে কাজ করছেন। রাজধানী ও এর আশপাশে টার্গেট কিলিংয়ে জড়িত কয়েকজন জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর মেজর জিয়ার নাম জানা যায়। তা ছাড়া এসব জঙ্গির মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড পর্যালোচনা, ই-মেইল অ্যাকাউন্ট, ফেসবুক ও টুইটার অ্যাকাউন্ট ঘেঁটেও অনেক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) একাংশের সঙ্গেও মেজর জিয়ার যোগাযোগ রয়েছে।
# | Cases | Deaths | Recovered |
---|---|---|---|
World | 0 | 0 | 0 |
Bangladesh | 0 | 0 | 0 |
Data Source: worldometers.info |
সানি সানওয়ার কাজ করেন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ নিয়ে। স্বপ্ন দেখেন কার্বন নিঃসরণমুক্ত বিদ্যুৎ–ব্যবস্থার। ...
বিস্তারিতধরুন আপনার অসাধারণ কিছু প্রোডাক্ট আছে। খুব সুন্দর করে কন্টেন্ট তৈরী করে নিজের ওয়েবসাইট সাজিয়েছেন। পণ্যের ছবি ...
বিস্তারিতআজকে যে বিষয়টা দিয়ে আলোচনা শুরু করতে চাই, সেই ধারণাটার জন্ম স্ট্রিং তত্ত্ব থেকে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এর ...
বিস্তারিতফেসবুক ব্যবহারের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি প্রায় সবাই জানেন। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্যের ...
বিস্তারিত