গরুর মাংস কুকুরে খেয়ে ফেলায় শিশু ফাহিমকে হত্যা
এক কেজি গরুর মাংস কুকুরে খেয়ে ফেলার কারণে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামের আট বছরের শিশু ফাহিম আহমেদকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ১৫ জুন সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালি সীমান্ত সংলগ্ন একটি পাট ক্ষেত থেকে শিশু ফাহিমের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামের মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী ছফুরা খাতুন, ছেলে ইব্রাহিম হোসেন ও ইসরাফিল হোসেন। এছাড়া ইসরাফিল হোসেনের স্ত্রী তামান্না খাতুনকে আটক করা হলেও প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ফাহিম আহমেদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জানান,স্থানীয় বাজারে মুজিবর রহমানের সাইকেল মেরামতের একটি দোকান রয়েছে। গত ১৪ জুন সকালে এক কেজি গরুর মাংস কেনেন মুজিবর রহমান। সে সময় শিশু ফাহিমকে দিয়ে ওই মাংস বাড়ি পাঠান তিনি।
ফাহিম মুজিবর রহমানের বাড়ি গিয়ে দেখে তাদের বাড়িতে কেউ নেই। সে সময় বাড়ির সামনে থাকা ভ্যানের ওপর মাংস রেখে চলে আসে সে। পরে মুজিবর রহমানের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি এসে দেখে মাংসের প্যাকেট কুকুরে টানাটানি করছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুজিবর রহমান ফাহিমকে ডেকে পাঠায় এবং মাংসের প্যাকেটের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। ফাহিম উত্তর দিলে মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বেদম মারপিট করে।
এতে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফেটে রক্ত বের হতে থাকলে রক্ত বন্ধ হওয়ার জন্য আঠা লাগায় মুজিবর ও তার পরিবারের সদস্যরা। তাতে রক্ত বন্ধ না হয়ে উল্টো ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে চাক চাক হয়ে ওঠে। তখন কোন উপায় না পেয়ে ফাহিমকে একটি বাক্সে বন্দি করে রাখে তারা। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর পর রাতে কোন এক সময় ফাহিমকে পাশের একটি পাটক্ষেতে ফেলে দেয় তারা।
প্রসঙ্গত, ফাহিম সদর উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মনিরুল ইসলামের ছেলে। মায়ের সাথে কুশখালি গ্রামে নানা হাজি মোহাম্মদ আলির বাড়িতে থাকতো ফাহিম।
– See more at: http://www.priyo.com/2016/Jun/18/222274#sthash.eUkPE1wk.dpuf
Like this:
Like Loading...