গুলশানে রেস্টুরেন্টে গোলাগুলি, ওসি সালাহ উদ্দিন নিহত, আহত অর্ধশত
রাজধানীর গুলশান-২-এর ৭৯ নম্বর সড়কের একটি রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গুলশান ২ নম্বরের কাছে হলি আর্টিজান বেকারির ভেতরে গোলাগুলি শুরু হয়। রেস্টুরেন্টটি লেকভিউ ক্লিনিক ও নর্ডিক ক্লাবের কাছে অবস্থিত। এ ঘটনায় বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন নিহত হয়েছেন। এছাড়া তিন পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশত আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন এডিসি আহাদুল ইসলাম, পুলিশ কনস্টেবল প্রদীপ (২৮), পুলিশ কনস্টেবল আলমগীর (২৬) ও মাইক্রোবাস চালক আব্দুর রাজ্জাক (৩০)। এ সময় হোটেলের ভেতরে ৪ জন জাপানি নাগরিকসহ প্রায় ২০ জিম্মি হয়ে পড়েছেন। একই ভবনে ও কিচেন নামে আরেকটি রেস্টুরেন্ট আরও ৫জনকে জিম্মি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি। শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।
আইজিপির প্রটোকলে থাকা এএসআই ইসমাইল জানান, সাড়ে দশটা থেকে এগারোটার মধ্যে বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। হাসপাতালটিকে পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। আইজিপি হাসপাতালের ভেতরেই আছেন।
গুলশানের গোলাগুলির ঘটনায় আহত দুই পুলিশ সদস্যা
আব্দুর রাজ্জাক গলায় ও শরীরের অন্যান্য স্থানে, প্রদীপের বাম গাল ও ডান পায়ে, আলমগীরের ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের ইউনাইটেড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা হোটেল ঘিরে রেখেছি। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলি দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
রেস্টুরেন্ট ও কিচেনের সুপারভাইজার সুমন পারভেজ বলেন, আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে তিন চার জনের একটি দল রেস্টুরেন্টে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করার চেষ্টা করে। তখন রেস্টুরেন্টের ভেতরে সবাই দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায়। আমি রেস্টুরেন্টের কিচেনের ছাদ দিয়ে পালিয়ে আসি। তখনও ভেতরে স্টাফসহ ২২ জন জিম্মি অবস্থায় ছিলেন।
আহত পুলিশ কনস্টেবল প্রদীপ জানান, একজন ব্যক্তিকে রেস্টুরেন্টের সামনে গুলি করে কেউ ফেরে রেখেছে বা গুলি করতেছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা তাকে রক্ষা করার জন্য সেখানে যাই। ঠিক ওই এলোপাতাড়ি গুলি এসে আমাদের গায়ে লাগে।
তবে, এ ঘটনার কারণ ও রেস্টুরেন্টের ভেতরের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানা যায়নি। র্যাব-পুলিশ-বিজিবি ওই এলাকা ঘেরাও করে রেখেছে। ঘটনাস্থলে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা হাজির হয়েছেন। রেস্টুরেন্টের ভেতর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানের জন্য প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, কিছুক্ষণ পরপরই রেস্টুরেন্টের মধ্য থেকে গুলি ও গ্রেনেডের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। নিরাপত্তার কারণে পুরো এলাকার সড়কের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের আইজি একে এম শহিদুল ইসলাম, র্যাবের ডিজি বেনজির আহমেদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এছাড়া পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
এদিকে র্যাবের ডিজি বেনজির আহমেদ জানান, জিম্মি অবস্থা অবসানের জন্য সর্বাত্মকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
Like this:
Like Loading...