গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে বাণিজ্য করছে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক। তারা বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানির কাছে গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহ করছে। বিনিময়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে ওইসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। গতকাল বুধবার মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বিভিন্ন গ্রাহকদের তথ্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু তারা যে পরিমাণ গ্রাহকদের তথ্য বিক্রির কথা জানিয়েছে তার চেয়েও বেশি গ্রাহকের তথ্য বিক্রি করা হয়েছে বলে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ তথ্য এবং বিভিন্ন সাক্ষাত্কারের মাধ্যমে জানা গেছে, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তার নীতিকে লংঘন করছে। এর মাধ্যমে ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালির অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মুনাফা করছে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানই ধনী হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ একদিকে বেশি গ্রাহক পাচ্ছে, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করছে এবং তথ্য বিক্রি করেও অর্থ আয় করছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ডিভাইস এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কিত। ফলে এসব বন্ধুদের তথ্যও পাওয়া সহজ হয়ে যায়। বর্তমানে ফেসবুকের দুইশ’ কোটির বেশি গ্রাহক আছে। কিন্তু তাদের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় স্বচ্ছ কোনো ব্যবস্থা নেই।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, মাইক্রোসফটের বিং সার্চ ইঞ্জিনকে গ্রাহকদের বন্ধুদের নাম পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। নেটফ্লিক্স এবং সফটিপাইকে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত বার্তা পড়ার অনুমতি দিয়েছে ফেসবুক। এজন্য কারো কাছ থেকে কোনো সম্মতি নেওয়া হয়নি। গ্রাহকদের নাম এবং তাদের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের বিভিন্ন তথ্য আমাজনকে দিয়েছিল ফেসবুক। ২৭০ পৃষ্ঠার অভ্যন্তরীণ নথি বিশ্লেষণ করা ছাড়াও সাবেক ফেসবুক কর্মীসহ ৬০ জনেরও বেশি মানুষের সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে পত্রিকাটি প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, তথ্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে দেড় শতাধিক কোম্পানিকে সুবিধা দিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে- অ্যাপল, অ্যামাজন, ব্ল্যাকবেরি ও ইয়াহুর মতো অংশিদার কোম্পানিগুলো নির্মিত ডিভাইস বা প্ল্যাটফর্মের মধ্য দিয়ে ব্যবহারকারীরা যেন তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিংবা বিশেষ ফিচারগুলোতে ঢুকতে পারে তা নিশ্চিত করতেই এ কাজ করেছে তারা। গত মার্চ থেকে ফেসবুক নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা ক্যাম্ব্রিজ অ্যানালিটিকা ফেসবুক গ্রাহকদের তথ্য অবৈধভাবে ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনে সহায়তা করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে।