নারী উদ্যোক্তারা নারী কর্মী বেশি নিয়োগ দেয়: গবেষণা
প্রযুক্তি স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর যেগুলোতে অন্তত একজন নারী প্রতিষ্ঠাতা আছেন, সেগুলোতে নারী কর্মী নিয়োগের পরিমাণ বেশি। অনলাইন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম ‘ফান্ডার্স ক্লাব’ এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে নারী আছে, এমন প্রতিষ্ঠানে নারী নিয়োগের হার অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
ফান্ডার্স ক্লাব’র গবেষণায় দেখা গেছে, অন্তত একজন নারী উদ্যোক্তা আছেন, এমন প্রতিষ্ঠানের ৪৮ শতাংশ কর্মী নারী; নারী উদ্যোক্তা নেই, এমন প্রতিষ্ঠানের তুলনায় যা দ্বিগুণ। গুগলে ৩১ শতাংশ, ফেসবুকে ৩৩ শতাংশ এবং অ্যাপলে ৩২ শতাংশ নারী কর্মী আছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠানে নির্বাহী নেতৃত্ব এবং ইঞ্জিনিয়ারিং দলের দলনেতা হিসেবেও নারীর অন্তর্ভুক্তি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় দ্বিগুণ।
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, নারী নেতৃত্ব একটি প্রতিষ্ঠানের নারীদের অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলোতে পুরুষদের একক আধিপত্য নিয়ে প্রায়ই যে সমালোচনা হয়, এ গবেষণায় দেখা গেছে, সে অবস্থা দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে। নারীরা দিন দিন আরও বেশি উদ্যোক্তা হওয়ার দিকে ঝুঁকছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও সাধারণভাবে শুধু পুরুষদের নিয়োগ দেওয়ার পথ থেকে সরে এসে অাগের চেয়ে বেশি নারী নিয়োগ দিচ্ছে এবং এ খাতের কর্মীদের মধ্যে লৈঙ্গিক বৈষম্য কমে আসছে।
ফান্ডার্স ক্লাব’র সিইও অ্যালেক্স মিত্তাল ইউএসএ টুডেকে বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট কোন প্রত্যাশা ছাড়াই গবেষণাটি করেছিলাম। কিন্তু নারী উদ্যোক্তা ও নারী উদ্যোক্তাহীন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ সুস্পষ্ট বিভেদ আমাদের অবাক করেছে।’
ক্রাঞ্চ বেজ এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালে এখন পর্যন্ত ১৭ শতাংশ প্রযুক্তি স্টার্ট আপ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা নারী। গত পাঁচ বছর ধরে এ হার একই আছে যদিও যুক্তরাষ্ট্রের মোট কর্মীর প্রায় অর্ধেকই নারী এবং দেশটির ৩৬ শতাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসার উদ্যোক্তা নারী।
যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারী ও বিশেষ শ্রেনীভুক্ত কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থান দিন দিন ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন হচ্ছে।
স্মার্টফোনের মাধ্যমে বাচ্চাদের সেবা দেওয়ার বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হ্যাচ বেবি’র নারী সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যান ক্রেডি ওয়েইস বলেন, আপনি যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকেই কর্মী নিয়োগের বেলায় বৈচিত্র না আনেন, তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানটি কোনোদিন সাফল্য পাবে না। আপনার মনে রাখতে হবে, আপনার প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যত ফেসবুক, উবার, গুগল সমতুল্য হতে পারে। তাই শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মী নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
স্টার্ট আপ প্রতিষ্ঠান ‘বিজি’র দুইজন প্রতিষ্ঠাতাই নারী। চিয়ারা ম্যাকফি এবং জ্যান কেসলার নামের এ দু’জন নারী বলেন, আমরা নারীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্যই প্রতিষ্ঠান খুলি নি, বরং নারীরাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতি আকর্ষিত হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক কর্মীই নারী।
সম্প্রতি স্যান্ডগ্রিড এটিকে অধিগ্রহণ করে নেয়।
কেসলার বলেন, আমরা যখন নারী প্রার্থীদের সাথে কথা বলেছি, তখন তারাই দু’জন নারী উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য মুখিয়ে ছিল।
কর্মী নিয়োগে বৈষম্যের জন্য কাপর ক্যাপিটাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সহ বিনিয়োগকারী এলেন পাও তার আগের এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। বর্তমানে তিনি রেডিট এর সিইও। ইউএসএ টুডেকে তিনি বলেন, ‘প্রথমে একজন নির্বাহী এবং পরে রেডিটের সিইও হিসেবে আমি দেখেছি, ‘নারীরা ও বিভিন্ন বর্ণের মানুষেরা অন্যদের তুলনায় তাদের কাজের প্রতি বেশি একাগ্র।’
Like this:
Like Loading...