ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে সাইবার হামলা, ই-লেনদেন ইত্যাদি ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকে ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবহার করলেও সঠিক প্রচারণা ও সচেতনতার অভাবে সাধারণ মানুষ এর সুফল নিতে পারছে না।
ডিজিটাল স্বাক্ষর কিভাবে ব্যবহার করা যাবে, সুফল কী—সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন আল-আমীন দেওয়ান
ডিজিটাল স্বাক্ষর কী
কাউকে চিঠি লিখলেন। খামে পুরে পাঠিয়ে দিলেন কোনো মাধ্যম বা কারো হাতে। আপনার চিঠি যদি অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ পড়ে ফেলে, তা প্রেরক ও প্রাপক দুজনের জন্যই শঙ্কার কারণ হতে পারে। কিন্তু চিঠিটি যদি সিলগালা করা থাকে, তাহলে পথে কেউ খুলেছে কি না তা বুঝতে পারবেন প্রাপক।
বলা যায়, চিঠির দিন ফুরিয়েছে। তথ্য লেনদেনে ইন্টারনেটের প্রাধান্য এখন। ইন্টারনেট দুনিয়ায় তথ্যের নিরাপত্তায় ডিজিটাল স্বাক্ষর সিলগালার মতো কাজ করে। অনলাইন লেনদেন তথ্য নিরাপত্তায় এই সিলগালায় এমন ব্যবস্থা করা হয়, যেখানে অনলাইনে তথ্য প্রদানকারী, আবেদনকারী, লেনদেনকারী সবার পরিচয় ‘প্রমাণযোগ্য’ ও ‘নিশ্চিত’ থাকে। এখানে একজনের শনাক্তকরণ চিহ্ন কোনোভাবেই অন্যজন ব্যবহার করতে পারে না। তথ্যের বিকৃতি তো দূরে থাক, তথ্যে অনুপ্রবেশেরও সুযোগ নেই।
কারিগরি পদ্ধতি
ডিজিটাল স্বাক্ষরের মূল বিষয় পাবলিক কি ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা পিকেআই-এ। ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদ তৈরি, পরিচালনা, বিতরণ, ব্যবহার, সংরক্ষণ, প্রত্যাহার এবং গোপনীয়তা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে পিকেআই।
স্বাক্ষর পদ্ধতিতে দুটি কি বা চাবি সংকেত থাকে। একটি ‘পাবলিক কি’, যা সবার ব্যবহারের জন্য। অন্যটি ‘প্রাইভেট কি’, যা ডিজিটাল সনদ নেওয়া ব্যক্তিই শুধু জানবেন। একটি দিয়ে তথ্য গোপন করলে আরেকটি দিয়ে তা উন্মুক্ত করা যাবে। একটি কি দিয়ে তথ্য সিলগালা করে দিলে আরেকটি কি দিয়ে তা খোলা যায়।
ডিজিটাল স্বাক্ষর সার্টিফায়েড প্রেরকের পাঠানো পাবলিক কি প্রাপক পাবেন। এরপর ওই কি দিয়ে মেইল বা তথ্যে ঢুকতে পারবেন প্রাপক। এতে তথ্যের প্রেরক প্রাপকের পরিচয় নিশ্চিতের পাশাপাশি তথ্য সুরক্ষাও নিশ্চিত হবে।
প্রাপক পাবলিক কি দিয়ে বার্তা যাচাই করতে পারবেন।
বাংলাদেশে ব্যবহারের পরিধি
ব্যাংকের ওয়েবসাইট, মেইল আদান-প্রদান, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ভোটার আইডি, স্মার্টকার্ড, পাসপোর্ট, ই-টিন, সরকারি পেনশন প্রক্রিয়া, শিক্ষা সনদ, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টসহ যেকোনো অনলাইন লেনদেন ও ডাটা ট্রান্সফারের জন্য এই ডিজিটাল স্বাক্ষরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে। ই-নথি ব্যবহারে এর গুরুত্ব অনেক।
মিলবে কোথায়
সরকারের কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটি (সিসিএ) ডিজিটাল স্বাক্ষর ও সনদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনুমোদিত কর্তৃপক্ষ। সিসিএ দেশে এখন পর্যন্ত দোহাটেক নিউ মিডিয়া, ডাটা এজ, ম্যাংগো টেলিসার্ভিস, বাংলাফোন, কম্পিউটার সার্ভিসেস এবং বিসিসি এই ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল স্বাক্ষর ও সনদ প্রদানের লাইসেন্স দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে চলতি মাসেই বাংলাদেশ পাবলিক কি ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা পিকেআই ফোরাম গঠিত হয়েছে। নবগঠিত ফোরামটি এশিয়া পিকেআই কনসোর্টিয়ামের মূল সদস্য মনোনীত হয়েছে।
ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদ ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক—এই দুই পর্যায়ে দেওয়া হয়।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে সনদ পেতে লাগবে—
♦ গ্রাহক সঠিক কি না, তা যাচাইয়ের জন্য সরকার থেকে দেওয়া কোনো পরিচয়পত্র। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট, ই-টিআইএন ইত্যাদি কাজে আসবে।
♦ একটি সচল ই-মেইল ঠিকানা।
♦ যথাযথভাবে পূরণ করা সার্টিফাইং অথরিটি বা সিএ-র পক্ষ থেকে দেওয়া নিবন্ধন ফরম।
♦ ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিদ্যুৎ বা টেলিফোন বিলের কপি।
প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সনদ পেতে লাগবে—
♦ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মনোনীত ব্যক্তি সঠিক কি না তা শনাক্ত করার জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অনুমোদনপত্র।
♦ গ্রাহক সঠিক কি না তা যাচাইয়ের জন্য সরকার থেকে দেওয়া কোনো পরিচয়পত্র। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট, ই-টিআইএন ইত্যাদি কাজে আসবে।
♦ প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া পরিচয়পত্রের কপি।
♦ প্রতিষ্ঠানের ডোমেইনের আওতাধীন একটি সচল ই-মেইল ঠিকানা।
♦ যথাযথভাবে পূরণ করা সার্টিফাইং অথরিটি বা সিএ-র পক্ষ থেকে দেওয়া নিবন্ধন ফরম।
♦ বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বা টেলিফোন বিলের কপি বা প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের ঠিকানা ও এর প্রমাণপত্র।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সার্টিফাইং অথরিটির (সিএ) কাছে জমা দিতে হবে। যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ফল হলে ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো হবে।
ফল নেতিবাচক হলেও সেটা ই-মেইলের মাধ্যমে কারণসহ জানিয়ে দেওয়া হবে।
খরচ কেমন
ব্যক্তিপর্যায়ে ক্লাস ওয়ান সার্টিফিকেটের জন্য লাগবে ৭০০ টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এটা এক হাজার টাকা। ক্লাস টুতে ব্যক্তিপর্যায়ে দুই হাজার এবং প্রাতিষ্ঠানিক তিন হাজার টাকা। ক্লাস থ্রির এখনো কোনো ফি নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসাবে নির্ধারণ হয়ে থাকে। এটি সরকারের সার্টিফাইং অথরিটির বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ফি। প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে আরো কম ফি নিতে পারে।
বর্তমান অবস্থা
দেশে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদ সরবরাহ করা হয়েছে। ডাটা এইজের ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যবস্থাপক সমীরণ চক্রবর্তী জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক অনুমোদনের পর থেকে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৩০ হাজার ডিজিটাল স্বাক্ষর সার্টিফিকেট সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রকল্প, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটে সনদ সরবরাহ করেছেন তাঁরা। দোহাটেক জানায়, তারা ক্লাস টু শ্রেণির সিকিউর ই-ইমেল সার্টিফিকেট দিয়েছে ২৫ হাজার। এসএসএল দিয়েছে ৫০০, যা ক্লাস থ্রি প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট। এ ছাড়া ম্যাংগো টেলিসার্ভিস ১২৫, বাংলাফোন ১৪৩, কম্পিউটার সার্ভিসেস ছয়টি দিয়েছে। বিসিসি এখন কোনো সনদ দেয়নি।
সরকারের সিসিএর নিয়ন্ত্রক আবুল মনসুর মোহাম্মদ সরাফউদ্দিন ৮ জুন পিকেআই ফোরামের এক অনুষ্ঠানে জানান, নাগরিক ই-সেবায় দক্ষিণ কোরিয়া এখন বিশ্বে ১ ন
# | Cases | Deaths | Recovered |
---|---|---|---|
World | 0 | 0 | 0 |
Bangladesh | 0 | 0 | 0 |
Data Source: worldometers.info |
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের জন্য খবরের শিরোনামে রয়েছে চিন। এই দেশেরই এক শহরে প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল, ...
বিস্তারিতলক ডাউনের মধ্যে পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে ভিডিও কল। আর সেই কারণে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ...
বিস্তারিতনিউইয়র্ক: কান ঘেঁষে না হলেও পাশ ঘেঁষে তো বটেই। কেটে গেল ফাঁড়া। পৃথিবীর পাশ কেটে বেরিয়ে গেল প্রায় ২ কিলোমিটার ...
বিস্তারিতকরোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হওয়া নতুন রোগী শনাক্তে অভিনব ব্যবস্থা নিয়েছে চীন সরকার। সম্প্রতি দেশটির কিছু ...
বিস্তারিত