বাংলাদেশ হতে রিসার্চ সেন্টার গুটিয়ে নিচ্ছে ভিজার্টি
ভার্চুয়াল স্টুডিও, ব্রডকাস্ট মিডিয়া ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার তৈরিতে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানি ভিজার্টি বাংলাদেশ হতে রিসার্চ সেন্টার গুটিয়ে নিচ্ছে।
কোম্পানিটির সবচেয়ে বড় রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরএন্ডডি) ছিল বাংলাদেশে। সর্বশেষ কোম্পানিটিতে প্রায় অর্ধশত কর্মী রয়েছে। যাদের অধিকাংশ উচ্চ পর্যায়ের দক্ষ ও পেশাদার কম্পিউটার ও সফটওয়্যার প্রকৌশলী।
নরওয়েরভিত্তিক কোম্পানিটির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার বাংলাদেশ সেন্টারে এসে এই সাট-ডাউনের ঘোষণা দেন। নোটিশে পাঁচ মাসের মধ্যে অফিস গুটিয়ে নেয়ার কথা জানানো হয়। কর্মীরা বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের পাওনা বুঝে পাবেন বলে জানায় তারা।
ভিজার্টি বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদুল হক আজাদ টেকশহরডটকমকে জানান, ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর প্রধান বিষয় এখন নিরাপত্তা। এছাড়া ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান বাজার পরিস্থিতিও একটা বিষয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সেন্টার হতে ভিজার্ট লাভবান হচ্ছিল। বাংলাদেশের অফিস তুলে নিয়ে কোম্পানিটি খরচ কমাচ্ছে না বরং নিজেদের ক্ষতি মেনে নিচ্ছে। একই নিরাপত্তা ইস্যুতে কোম্পানিটি ইসরাইল হতেও আরএন্ডডি সেন্টার গুটিয়ে নিচ্ছে।
বাংলাদেশের এত উচ্চমানের আরএন্ডডি সেন্টার আর একটিও নেই দাবি করে মাহমুদুল হক আজাদ জানান, এখন এমন পেশাদার কর্মীসহ ওয়েল ইক্যুপ্ট অফিসে চাইলে বাংলাদেশের কেউ বিনিয়োগ করতে পারে। এমন কি সরকারও আরএন্ডডি সেন্টার নিয়ে ভাবতে পারে। সেন্টারটির হাইলি পেইড কর্মীরা হুট করেই কর্মহীন হয়ে পড়ল।
এমন একটি কোম্পানির রিসার্চ সেন্টার তুলে নিয়ে যাওয়াটা অন্য কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ও আরএন্ডডি স্থাপনের আগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করছেন।
বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা, ফক্স, স্কাই নিউজসহ দেশি চ্যানেল এনটিভি, একাত্তর, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনেও ব্যবহার হয় এ কোম্পানির সফটওয়্যার। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমেও ব্যবহৃত ভিজার্টির সফটওয়্যার।
ভিজার্টির সফটওয়্যার দিয়ে খেলা বিশ্লেষণ করে থাকে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল (ফিফা)। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ফিফার অফিসিয়াল অ্যানালিসিস পার্টনার ছিল ভিজার্টি। যেখানে গোল হয়েছে কি না, অফসাইড দেখা ও অন্যান্য কিছু বিশ্লেষণ করা হয় এ কোম্পানির তৈরি সফটওয়্যার দিয়ে। আমেরিকার নির্বাচনেও রিয়েল টাইম অ্যানালিসিসে বহুল ব্যবহৃত এর সফটওয়্যার।
আর এসব সফটওয়্যার তৈরির পেছনে মেধা ও শ্রম রয়েছে বাংলাদেশ আরএন্ডডির, বাংলাদেশি কর্মীদের।
বাংলাদেশে ভিজার্টির শুরুর একজন মমেনুল ইসলাম মিল্টন। ২০০৭ সালে যখন দেশে এটি যাত্রা শুরু করে তখন তিনি সিওও হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীদের ২০০৯ হতে ২০১২ পর্যন্ত এমডির দায়িত্ব পালন করে ভিয়েতনামের কোম্পানিটির রিজিওনাল হেড হিসেবে ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করেন।
কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় তিনি বলেন, দেশে ইনোভেশনের ধারাবাহিকতা রাখা হয়নি।
Like this:
Like Loading...