প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে সন্ত্রাসীদের পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করতে পারে এমন সব প্রচারিত বিষয় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে জামায়াত আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সংগঠিত করার সুযোগ পায়। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তারা আধিপত্য বিস্তার করে। তাই তাদের মতাদর্শের কিছু মিডিয়াকে সুযোগ পেলেই সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে দেখা যায়।
গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণের কথা বলার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে এটাও সত্য, বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও মানুষ হত্যা বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যম জাতির সামনে তুলে ধরে তা প্রতিরোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে ভূমিকা রেখেছে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘জঙ্গিবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি শর্ত দিয়ে বলছে-এটা করেন, না হলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বন্ধ হবে না। তাদের কথাবার্তায় প্রতীয়মান হয়, শুধুমাত্র তাদের শর্তটা মানলে তারা এটা বন্ধ করে দেবে। বিএনপির যেসব বক্তব্য আসছে, তাতে খুব স্বাভাবিক ও প্রচ্ছন্নভাবেই মনে হয় যে তারাই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের মদদদাতা।’
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে পাঠানো জঙ্গিবাদবিরোধী খুতবা ও বয়ান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মসজিদের খুতবা ও বয়ানের সময় সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত করে এ ধরনের বক্তব্য যাতে প্রচারিত হতে না পারে, সে জন্য ১৫ জুলাই থেকে সারা দেশের মসজিদগুলোতে ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা, সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের দায়দায়িত্ব এবং জঙ্গিবাদ নির্মূলে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য অভিন্ন খুতবা সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে সব মসজিদে যেটা পাঠানো হয়েছে, সেটা খুতবা নয়। জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী বক্তব্য। আমরা এগুলো এ জন্য দিয়েছি যে এগুলোতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে যেসব উদ্ধৃতি রয়েছে, সেগুলো যেন খুতবার আগে পাঠ করা হয়। ধর্মীয় শিক্ষাগুরু ও ওলামা-মাশায়েখরা যখন কথা বলেন, তখন তাঁদের পক্ষে জনমত গঠনের সুযোগ থাকে। জঙ্গিবাদবিরোধী জনমত যাতে সৃষ্টি করতে পারেন, সে জন্য এটা দেওয়া হয়েছে।’
সমাপনী ভাষণ
গতকাল বুধবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিদের সঙ্গে বিএনপির যোগসূত্র কী এবং তারা কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কি না, তা দেখতে হবে।
কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর বিএনপির নেতা হান্নান শাহ ও শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, বিএনপির নেতাদের এত আহজারি কেন? জঙ্গিদের জন্য বিএনপির নেতাদের এত দরদ কেন? আর তাদের মনে এত সন্দেহ কেন যে এঁরা জঙ্গি কি না? ওদের লাশে দেখা গেছে, ঠিক গুলশানে যে ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে, ওই জিনসের প্যান্ট, ওপরে কালো আলখাল্লা পরা। মাথায় একই ধরনের চাদর বাঁধা। তারপরও তাদের মনে সন্দেহ, বিষয়টা কী?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির দুই নেতা গুলশানের ঘটনার সঙ্গে কল্যাণপুরের ঘটনা তুলনা করেছেন। কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কিন্তু এ দুই ঘটনার তুলনা করতে পারে না। একটায় জঙ্গি ঢুকে মানুষ হত্যা করেছে। কিছু মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। সেখানে জঙ্গি দমনে ভিন্ন পথ নিতে হয়েছে। আর এখানে জঙ্গিদের একটি আস্তানা পাওয়া গেছে এবং তারা বুঝে গেছে পুলিশ তাদের ঘেরাও করে রেখেছে। পুলিশের ওপর তারা গুলিও করেছে। একজন পুলিশ আহত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা একটা সন্দেহের ব্যাপার যে তাদের কোথায় ঘা লাগল। কোথায় ব্যথা পেলেন তাঁরা।’
জঙ্গি দমনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমরা এখান থেকে মুক্ত হতে পেরেছি। জাতিকে আমরা আহ্বান করব, আমরা সমগ্র জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। সবাই মিলে আমরা ইনশাআল্লাহ এই জঙ্গি দমন করতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে হামলা হয়েছে, সেখানে জঙ্গিদের ঘটনাস্থলেই মেরে ফেলা হয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকা, জাপানের ঘটনায় জঙ্গিরা এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে অথবা তাদের হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গি মোকাবিলা করতে গেলে, দমন করতে গেলে এটাই নিয়ম।
কল্যাণপুরের ঘটনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দিন থেকেই আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা থেকে খবর পাচ্ছিলাম যে আর একটা বড় ধরনের নাশকতা তারা করবে। সে কথাটা এর আগে আমি কিন্তু বলেওছিলাম। যে কারণে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ব্লক রেইড (এলাকাভিত্তিক তল্লাশি অভিযান) করে অভিযান শুরু করি। যেখানেই তথ্য পাচ্ছি, সেখানেই অভিযান শুরু করেছি। এ সময় ওখানে জঙ্গিদের একটি আস্তানা পাওয়া গেছে। সেই আস্তানা কী অবস্থায় ছিল? সেখানে গিয়ে বোঝা যাচ্ছিল যে তাদের একটা উদ্দেশ্য ছিল বা প্রস্তুতি ছিল যে তারা কোথাও কোনো জায়গায় হামলা করতে বের হবে। যারা ব্লক রেইড করছিল, তারা সঙ্গে সঙ্গেই ওইটা ঘিরে ফেলে। কিন্তু ভিতর থেকে জিঙ্গরা কিন্তু গুলি করতে শুরু করে। বোমা মারতে শুরু করে। এ সময় তারা আল্লাহু আকবার বলে শব্দ করছিল। এখান থেকে দুজন পালাতে চেষ্টা করে। একজন গুলিবদ্ধি অবস্থায় ধরা পড়ে আর একজন পালিয়ে যায়। পুলিশ ও সোয়াত জঙ্গিদের আস্তানায় ঢুকতে সক্ষম হয় এবং গুলাগুলিতে নয় জঙ্গি মৃত্যুবরণ করে। সময়মতো যদি পুলিশ বাহিনী ব্যবস্থা না নিত, তাহলে তারা অনেক বড় অঘটন ঘটাতে পারত।’
# | Cases | Deaths | Recovered |
---|---|---|---|
World | 0 | 0 | 0 |
Bangladesh | 0 | 0 | 0 |
Data Source: worldometers.info |
সানি সানওয়ার কাজ করেন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ নিয়ে। স্বপ্ন দেখেন কার্বন নিঃসরণমুক্ত বিদ্যুৎ–ব্যবস্থার। ...
বিস্তারিতধরুন আপনার অসাধারণ কিছু প্রোডাক্ট আছে। খুব সুন্দর করে কন্টেন্ট তৈরী করে নিজের ওয়েবসাইট সাজিয়েছেন। পণ্যের ছবি ...
বিস্তারিতআজকে যে বিষয়টা দিয়ে আলোচনা শুরু করতে চাই, সেই ধারণাটার জন্ম স্ট্রিং তত্ত্ব থেকে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এর ...
বিস্তারিতফেসবুক ব্যবহারের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি প্রায় সবাই জানেন। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্যের ...
বিস্তারিত