চিনের প্রাচীর, হোয়াইট হাউস, বাকিংহাম প্যালেস, এমনকী সাহারা মরুর ঢিবির আবডাল আপনার সামনে উন্মুক্ত গুগল আর্থ-এর দাক্ষিণ্যে। পৃথিবীর এমন কোনও জায়গা কি রয়েছে, যাকে এই অ্যাপ দেখাতে অসমর্থ? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি কথাটা এই— তেমন কিছু জায়গা বাস্তবিকই রয়েছে, যাদের ডিটেল গুগল আর্থ দিতে অসমর্থ।
তেমন কিছু জায়গার হদিশ রইল এখানে। • অ্যান্থ্রাক্স দ্বীপ, স্কটল্যান্ড— মাত্র এক মাইল দৈর্ধ্যের এই ডিম্বাকৃতি দ্বীপটির চেহারা গুগল আর্থ কিছুতেই সানুপুঙ্খ দেখাতে পারে না। গ্রুইনার্ড উপসাগরের এই দ্বীপটি বহুকাল ধরেই মনুষ্যবর্জিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা এখানে অ্যান্থ্রাক্স বোমা পরীক্ষা করতেন বলেই এই দ্বীপ বাসযোগ্যতা হারায়। ঠিক কী কারণে গুগল আর্থ এই দ্বীপের গহীনে প্রবেশ করতে পারে না, তা জানা যায় না। • রসওয়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র— নিউ মেক্সিকোর এই জায়গাটির খ্যাতি ‘ইউএফও’ সাইট হিসেবে। এসময়ে মানুষের কৌতূহল ফেটে পড়েছিল এখানে ইউএফও দেখতে পাওয়ার সংবাদে। কিন্তু এই জায়গাটির আর একটি ইতিহাস রয়েছে। ১৯৪৭ সালে মার্কিন বিমান বাহিনীর এক গুপ্তচর বেলুন এখানে ভেঙে পড়েছিল। পরে ইউএফও-র গল্প ছড়িয়ে ব্যাপারটাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলে বলে জানা যায়। ১৯৭০-দশকে ইউএফও-র গুজব তুঙ্গে ওঠে। কোনও অজ্ঞাত কারণে এই জায়াগটির ডিটেলও গুগল আর্থ-এ অলভ্য। • গেথসেমানে বাগান, জেরুসালেম, ইজরায়েল— খ্রিস্টীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই বাগানে যিশু তাঁর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার আগের রাত্রিটি কাটিয়েছিলেন। এখানেই শয়তান তাঁকে প্রলুব্ধ করে বলে কথিত রয়েছে। আজ এই বাগান এক পবিত্র খ্রিস্টীয় তীর্থ। মা মেরিকে এই বাগানেই প্রথমে সমাহিত করা হয়েছিল বলেও কিংবদন্তি রয়েছে। গুগল আর্থ-এ এই স্থানটি কোনও অজ্ঞাত কারণে ঝাপসা হয়ে দেখা দেয়। • নারসার্সুক, গ্রিনল্যান্ড— মেরুবলয়ের এই জায়গাটি সংবাদশীর্ষে উঠে আসে ১৯৬৮ সালে। এই সময়ে একটি আণবিক অস্ত্রবাহী বিমান এই স্থানটির কাছেই উত্তর সমুদ্রে ভেঙে পড়ে। পুরো এলাকাটি প্লুটোনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তায় দুষ্ট হয়ে পড়ে বলে জানা যায়। গুগুল আর্থ-এ জায়গাটিকে দেখতে চাইলে কিচুতেই স্পষ্ট ছবি আসে না। • মদিনা, সৌদি আরব— ইসলামের বিখ্যাত তীর্থ। পয়গম্বর হজরত মহম্মদের পদধূলিধন্য এই পবিত্র নগরীকে গুগুল আর্থ যেভাবে দেখায়, তা অতি অদ্ভুত। ‘আলোকিত নগরী’ হিসেবে খ্যাত মদিনাকে কতগুলো সাদা ব্লকের সমাহার ছাড়া অন্য কিছু মনে হয় না গুগল আর্থ-এ। অথচ অ-মুসলমানদের কাছে মদিনা মোটেই ‘নিষিদ্ধ নগরী’ নয়। কেন এমন হয়, তা জানা যায় না।