আজকের বাংলা তারিখ
  • আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১৮ই জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, বিকাল ৩:৩৭

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে, সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী

রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি করবে না এবং সরকার এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ বলছেন ধ্বংস হয়ে যাবে সব। তাঁদের উদ্দেশ্যটা কী, সেটাই আমার প্রশ্ন? উদ্দেশ্য যদি হয় বাংলাদেশের উন্নয়নটা বাধাগ্রস্ত করা, তাহলে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে গুলশানের জঙ্গি হামলার মিল রয়েছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই যে গুলশানে হলি আর্টিজানে মানুষ খুন হলো। এমন একটা সময়, যখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের সব থেকে সুন্দর পরিবেশ। বিশ্বব্যাপী মানুষ উন্মুখ হয়ে ছিল বাংলাদেশে আসবে, বিনিয়োগ করবে। ঠিক সে সময় কয়েকটা ঘটনা ঘটিয়ে বিনিয়োগটাকে থামানো, উন্নয়নটাকে থামানোর চেষ্টা…। ঠিক একইভাবে মনে হয় যেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটা নিয়ে আন্দোলনের নামে এত কথা এবং বাধা দেওয়া। এই দুটোকে আপনি যদি তুলনা করেন। আমি খুব বেশি একটা তফাৎ দেখি না। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ যে গতিতে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল, সেখানে থামিয়ে দেওয়াই ছিল যেন তাদের একটা চেষ্টা।’
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনটি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের খবরটি নেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এতে তিনি রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবি জানান। এ ছাড়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বাতিলের দাবি জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে বিভিন্ন বাম ও পরিবেশবাদী সংগঠন।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বনের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের তথ্য তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করা হয়। প্রকল্পের গুরুত্ব নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
দেশি-বিদেশি ১৭৭টি সংগঠনের পক্ষ থেকে রামপাল প্রকল্পে অর্থায়ন না করার আহ্বান গেছে ভারতের এক্সিম ব্যাংকের কাছে। এই বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘সংগঠনগুলি কারা সেটা আমরা খোঁজ নিচ্ছি। আর যদি তারা (টাকা) না দেয়, নিশ্চয় আমরা অন্য সোর্স থেকে পাব। আর তাও যদি না পাই, আমরা নিজেদের টাকায় করব। আমাদের তা করার ক্ষমতা আছে, ইনশা আল্লাহ আমরা পারব। আমরা কি পিছিয়ে যাওয়ার লোক নাকি? পদ্মা সেতু বন্ধ করেছিল, আমরা করিনি? আমাদের নিজেদের টাকায় করব। তখন এরা কী করবে দেখব।’
দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করা সংগঠনের সঙ্গে সরকার আলোচনা করবে কি না জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনা করলেও তাদের কানে পানি যাবে না। বাংলাদেশে তাদের আমার চেনা আছে। কার মুখ থেকে কখন, কেন, কোন কথাটা বের হয়, তা আমার জানা আছে। তাদের সঙ্গে বসা যে হয়নি, তা নয়। তারা কোনো একটা কিছু মাথায় রেখে এগুলো করছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে উন্নয়নটা বাধাগ্রস্ত করা। আমরা পারি কেন? এটাই তাদের ক্ষোভ।’
কুইক রেন্টাল নিয়ে বিরোধিতা হয়েছে এবং এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আমি যদি বন্ধ করে দিই। যতগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র আমি করেছি, সেগুলো যদি বন্ধ করে দিই? তাহলে কী হবে? তখন হারিকেন দিয়ে চলতে হবে। পরিবেশ দূষণ হবে না।’
পেছনে খালেদা জিয়া: রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী সংগঠনের নেতাদের পেছনে খালেদা জিয়া রয়েছেন এমন ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা অসত্য, কাল্পনিক ও মনগড়া তথ্য প্রচার ও প্রকাশ করছেন। তাঁদের খুঁটির জোরটা কোথায় তা এখন পাওয়া গেছে। বেগম জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে।’ খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মনে হয় যেন মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি। ২০০০ সালে আমরা প্রথম দিনাজপুরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে তো তা বন্ধ করেননি। তখন তো পরিবেশের জন্য মায়াকান্না করেননি। সেখানে তিনফসলি জমি, ঘনবসতি ছিল। কই, ফসলের তো কোনো ক্ষতি হয়নি। সবুজ সবুজই আছে।’
রামপাল নিয়ে খালেদা জিয়ার দেওয়া তথ্যের পাল্টা তথ্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের সঙ্গে ভারতের ওই রকম নীতিমালার তুলনা সঠিক নয়। আন্তর্জাতিকভাবে গভীর বনভূমির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করার আইন আছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের প্রান্ত সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ভারতবিরোধিতা থেকে রামপালের বিরোধিতা কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতবিরোধিতা সব সময়ই আছে। ফারাক্কা চুক্তি যখন করতে যাই, তখনো বিএনপি আন্দোলন করেছে। দুই বছরের কম চুক্তি হলে মানবে না। আমি ৩০ বছরের চুক্তি করে আসছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সময় হরতাল দিয়ে বলে যে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। যাতে শান্তি চুক্তি না হয়, সেই আন্দোলন সংগ্রাম। তাদের দেহটা এখানে। আর হৃদয়টা পড়ে আছে ১২০০ মাইল দূরে। মন ভোমরা পড়ে আছে ওই খানে।’
দূষণের আশঙ্কা নাকচ: বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বায়ু, শব্দদূষণ; কয়লা পরিবহনের কারণে নদীদূষণের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শব্দদূষণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৪ কিলোমিটার দূরে শব্দ যাবে না। ২০০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। পশুর নদ থেকে পানি নিয়ে ব্যবহারের পর তা শীতল করে নদীতে ফেলা হবে। কোনো দূষিত বা গরম পানি নদীতে ফেলা হবে না। মালিকানা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের কোম্পানি ১৫ শতাংশ করে বিনিয়োগ করবে। বাকি ৭০ শতাংশ দেবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। গ্যারান্টার থাকবে বাংলাদেশ। অজ্ঞতাবশত কেউ কেউ এটাকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন। গ্যারান্টার হওয়া মানে তো বিনিয়োগ করা নয়। কোনো কারণে যদি কোম্পানি ব্যর্থ হয়, তখন ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন আসবে। সে রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তাঁরা রামপালে যান নাই: রামপাল আন্দোলনকারীদের সেখানে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরা কিন্তু রামপালে যান নাই। লংমার্চ করতে গেল, আমি বললাম যেতে দেন, যত দূর যেতে পারে। তারা বোধ হয় খুলনা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে এসেছেন। আমি চাচ্ছিলাম রামপালে যাক। ওনারা আন্দোলন ঢাকায় বসে করেন কেন? ওই জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, নষ্ট হবে, ওনারা যদি এত কিছু জানেন, ওইখানকার লোকদের তো তা বোঝানো উচিত। কাজেই একবার একটু রামপালে গিয়ে লোকজনকে একটু বলুক যে বিদ্যুৎকেন্দ্র এখানে হবে না। পরিবেশের ক্ষতি হবে। তখনই ওনারা জবাবটা পেয়ে যাবেন, যে মানুষ কী চায়। আমাদের কিছু করা লাগবে না। ওখানকার মানুষই করে দেবে।’
বামপন্থীরা অণু-পরমাণুতে পরিণত হচ্ছে: বামপন্থী কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও রামপালবিরোধীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আন্দোলন তো রামপালের জ্বালানি নিয়ে। ওনাদের আন্দোলনে কে জ্বালানি দিচ্ছে। মানুষ জোগাড় করা, গাড়ি-ঘোড়া ব্যবহার করার টাকাপয়সা কোথা থেকে পাচ্ছে? তিনি বলেন, ‘বামদের রাজনীতি ভাঙতে ভাঙতে টুকরা থেকে টুকরা, এখন অণু-পরমাণুতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। এরাই জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর ঝুড়ি-কোদাল নিয়ে মাটি কাটতে সবার আগেই দৌড়েছে। বলেছে গণতন্ত্র রক্ষা করতে যাচ্ছি। তখন যদি ওই সাপোর্ট না করত তাহলে এ দেশে রাজাকারের ঠাঁই হতো না। যুদ্ধাপরাধীরা ছাড়া পেত না। তারা সব সময় উল্টো রাজনীতি করে যায়।’
দেশ অভিশাপমুক্ত হয়েছে: নারায়ণগঞ্জে তামিম চৌধুরীসহ তিন জঙ্গিকে হত্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দিন থেকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম। মূল হোতাসহ তাদের খুঁজে বের করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। দেশ আরেকটা অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়েছে। জঙ্গিদের হোতা খতম হয়েছে… আবার প্রশ্ন যেন না করা হয় মেরে ফেলা হলো কেন? বাঁচিয়ে রাখা হলো না কেন? বাঁচিয়ে রাখলে অনেক তথ্য পাওয়া যেত—এই তত্ত্ব আবার কেউ না দেয়। এরা মরে গেলে তাদের জন্য কান্না। কেন কান্না। তার মানে তাদের সূত্র, যোগাযোগটা কী?’

MY SOFT IT Wordpress Plugin Development

Covid 19 latest update

# Cases Deaths Recovered
World 0 0 0
Bangladesh 0 0 0
Data Source: worldometers.info

Related News

১০ বছর ধরে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাক করছে চিন, চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করল ‘ব্ল্যাকবেরি’

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের জন্য খবরের শিরোনামে রয়েছে চিন। এই দেশেরই এক শহরে প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল, ...

বিস্তারিত

হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলে যোগ দিতে পারবেন চারজনের বেশি ইউজার

লক ডাউনের মধ্যে পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে ভিডিও কল। আর সেই কারণে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ...

বিস্তারিত

বেঁচে গেল মানব জাতি, পৃথিবীর পাশ ঘেঁষে বেরল বিরাট গ্রহাণু

নিউইয়র্ক: কান ঘেঁষে না হলেও পাশ ঘেঁষে তো বটেই। কেটে গেল ফাঁড়া। পৃথিবীর পাশ কেটে বেরিয়ে গেল প্রায় ২ কিলোমিটার ...

বিস্তারিত
করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত চীনে স্মার্ট হেলমেট

করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত চীনে স্মার্ট হেলমেট

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হওয়া নতুন রোগী শনাক্তে অভিনব ব্যবস্থা নিয়েছে চীন সরকার। সম্প্রতি দেশটির কিছু ...

বিস্তারিত
%d bloggers like this: