ওয়াশিংটন ডিসিতে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত শেষ প্রাইমারি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন হিলারি ক্লিনটন। মোট ডেলিগেট হিসাবে তিনি এক সপ্তাহ আগেই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। এ বিজয় তাঁর অবস্থান আরও সুদৃঢ় করল। এ রাজ্যে হিলারি ও স্যান্ডার্স ভোট পেয়েছেন যথাক্রমে ৭৮ শতাংশ ও ২১ শতাংশ।
অবশ্য গতকালের বড় খবর ছিল হিলারি-স্যান্ডার্সের বৈঠক। এদিন সন্ধ্যাবেলা তাঁরা ওয়াশিংটনের একটি হোটেলে একাধিক সহকারী নিয়ে সাক্ষাৎ করেন। উভয়েই সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়াতে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেন এবং বেরিয়ে যান। পরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্যান্ডার্সের নির্বাচনী দপ্তর থেকে জানানো হয়, এই মুখোমুখি সাক্ষাতে উভয় প্রার্থী সাধারণ নির্বাচনে কীভাবে দেশের মানুষকে ডেমোক্রেটিক পার্টির পেছনে ঐক্যবদ্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের জন্য যে হুমকি সৃষ্টি করেছেন, তা মোকাবিলায় তাঁরা দুজনে একযোগে কাজ করে যাবেন।
এই বিবৃতিতে যা বলা হয়নি, তা হলো স্যান্ডার্স জুলাই মাসে দলের সম্মেলনের আগে হিলারির মনোনয়ন সমর্থন করছেন না। স্যান্ডার্সের অন্যতম উপদেষ্টা মাইকেল ব্রিগস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সব নির্বাচনী বিষয় নিয়ে এ দুই প্রার্থী তাঁদের আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখবেন। ন্যূনতম বেতন, নির্বাচনী প্রচারব্যবস্থার সংশোধন, সবার জন্য স্বাস্থ্যবিমা ইত্যাদি প্রশ্নে তাঁদের মধ্যে পূর্ণ মতৈক্য এখনো অর্জিত হয়নি।
স্যান্ডার্স নিজে একাধিক সময়ে জানিয়েছেন, তিনি দলীয় কনভেনশন পর্যন্ত তাঁর ‘রাজনৈতিক বিপ্লব’ চালু রাখবেন। তাঁর এ কথার অর্থ, বিশ্লেষকেরা বলছেন, তিনি আপাতত হিলারিকে নিঃশর্তে সমর্থন দিচ্ছেন না। সম্মেলনে তিনি একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে চান এবং দলীয় রাজনৈতিক ইশতেহারে নিজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করাতে চান।
জরিপে এগিয়ে হিলারি: সর্বশেষ জাতীয় জনমত জরিপে হিলারি ক্লিনটন তাঁর সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ১২ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন। ব্লুমবার্গ পলিটিক্সের নেওয়া এই জরিপ অনুসারে হিলারি ও ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন রয়েছে যথাক্রমে ৪৯ শতাংশ ও ৩৭ শতাংশ মানুষের।
পলিটিক্সের গৃহীত অন্য আরেকটি জনমত জরিপ অনুসারে গুরুত্বপূর্ণ ১১টি অঙ্গরাজ্যে হিলারি ট্রাম্পের চেয়ে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণ: অরল্যান্ডোর সমকামী নাইট ক্লাবে গুলিবর্ষণের ঘটনার সূত্র ধরে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে মুসলমান অভিবাসী বন্ধ ও আমেরিকান মুসলমানদের ওপর নজর-দারি করার প্রস্তাব করে ডেমোক্র্যাটদের প্রবল আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছেন। অন্যদিকে রিপাবলিকান নেতৃত্ব তাঁদের দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর বক্তব্য ও আচরণে বিব্রত।
ট্রাম্পের উল্টো সুর!: আগ্নেয়াস্ত্রের পক্ষে তাঁর এত দিনের শক্ত অবস্থান থেকে সরে গিয়ে গতকাল এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চান সন্ত্রাসী হিসেবে নজরদারিতে থাকা লোকজন যেন আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে না পারে। এ নিয়ে অস্ত্রের অধিকারের পক্ষের শক্তিশালী লবি ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের (এনআরএ) সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।