হত্যাযজ্ঞের মাঝেও ইন্টারনেটে তৎপর ছিল সন্ত্রাসীরা
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় ঢুকে ‘আল্লাহু আকবর’ শ্লোগান দিয়ে ফাঁকা গুলি শুরু করে সন্ত্রাসীরা। জিম্মি করে ফেলে রেস্তোরাঁয় থাকা লোকদের। একপর্যায়ে তাদের কয়েকজনকে নৃশংসভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। অন্যদের জানা বা বোঝার আগেই তারা নিজেরাই ছবি প্রকাশ করে দিয়েছে তাদের ঘৃণ্য অভিযানের।
রাত দেড়টার দিকে দিকে আইএসের বার্তা সংস্থা বলে পরিচিত ‘আমাক’-এ হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠনটি। এরপর সকালে সেনা অভিযানের কিছু আগে নিহতদের রক্তাক্ত ছবি প্রকাশ করে। ওই বার্তা সংস্থায় তারা ২৪ জনকে হত্যার কথা জানায়। ছবিতে দেখা যায়, মেঝেতে পড়ে আছে লাশ আর লাশ। রক্তে লাল হয়ে আছে মেঝে।
রেস্টুরেন্টের ভেতরে ছিল শুধু সন্ত্রাসী ও তাদের হাতে জিম্মিরা। ভেতের কী হচ্ছিল তা বাইরের কেউই বুঝতে পারছিল না। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় রাত কাটে দেশবাসীর। একদিকে দেশবাসীর উৎকণ্ঠা, অন্যদিকে হত্যাকারীদের নারকীয় তাণ্ডব আর রক্তের হোলি খেলা। তবে দুই-একজনের মোবাইল থেকে তাদের স্বজনদের কাছে ক্ষুদে বার্তা এসেছিল। তাতে তখন তেমন কিছুই জানা যায়নি।
ভেতরে কী হয়েছে তা কোনো সংবাদমাধ্যমই জানতে পারেনি। বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যম জানার আগেই আমাকের বরাত দিয়ে সাইট ইন্টেলিজেন্সে ২৪ জন হত্যার কথা বলা হয়। সন্ত্রাসীরা ২৪ জন হত্যার যে খবর দিয়েছে, তা অনেকটা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। কেননা পরে অভিযান চালিয়ে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়ে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘটনার সময় সন্ত্রাসীরা স্মার্ট ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে। যা দিয়ে তারা ছবি তুলে বাইরে পাঠিয়েছে। হতে পারে তারা তাদের দলে নেতাদের এই হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অথবা তাদের সফলতার বিষয়টি জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো বিকৃত রুচির লোক ছাড়া অন্য কারো পক্ষে এত লোককে হত্যা করে এভাবে ছবি তুলে বাইরে পাঠানো বা প্রচার করা সম্ভব নয়।
সকালে উদ্ধার অভিযান চালানোর আগে ওই এলাকায় নেটের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। শনিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের মহাসড়ক উদ্বোধনের সময় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জানান, অভিযানের স্বার্থে ওই এলাকায় ক্যাবল লাইন, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ সরকার কর্তৃক ইন্টারনেট বন্ধের আগ পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা ইন্টারনেট ব্যবহারে তৎপর ছিল।
Like this:
Like Loading...