কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে দেওয়া যাবে ‘মেধা’, অবাক আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের
সুকুমার রায় তাঁর কবিতায় ‘ফুটোস্কোপ’ দিয়ে ‘মুন্ডু’ দেখার কথা বলেছিলেন। মগজের ভেতর কতখানি ‘ভেজাল’ আছে সেটার দেখার পাশাপাশি আরও অনেক কিছুই করার কথা তিনি কল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বিজ্ঞান যে একদিন তার চেয়েও অনেক ধাপ এগিয়ে মগজের ভেতর কারিকুরি করে তার ক্ষমতাকেই বাড়িয়ে ফেলতে সক্ষম হবে তেমনটা বোধহয় আগে ভাবা যায়নি। লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি এবং গোল্ডস্মিথস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দাবি করেছেন, এমন অদ্ভুত একটা কাণ্ড তাঁরা করে ফেলেছেন।
মস্তিষ্কের সামনের দিকে অবস্থিত লেফট ডোরসোল্যাটারাল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স (ডিএলপিএফসি) আমাদের অধিকাংশ চিন্তাভাবনার ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। ঠিক সেই অংশে খুব মৃদু পরিমাণে বিদ্যুৎ পাঠিয়ে সেই অংশের ক্ষমতাকে বাড়াতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, এই পদ্ধতি প্রয়োগ করার পরেই সেই ব্যক্তিদের চিন্তাশক্তিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ করা গেছে।
অন্যতম গবেষক ডঃ ক্যারোলিন ডি বের্নার্ডি লাফট জানিয়েছেন, ‘কোনও সমস্যায় পড়লে আমরা অভিজ্ঞাতা থেকে তার সমাধান খুঁজি। ডিএলপিএফসির দ্বারাই আমরা সেটা করি। কিন্তু যখন আমাদের সমস্যাটা নতুন হয়, তখনই হয় মুশকিল। কেননা তখন আমরা পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে কিছুই আন্দাজ করতে পারি না। সৃজনশীলতাকে আটকে দিতে থাকে সমস্ত পূর্ব অভিজ্ঞতা। এই অবস্থায় যদি আমাদের মস্তিষ্কের ওই অংশটিকে সাময়িক ভাবে দমন করে রাখা যায়, তা হলে এই মানসিক সংশোধন করে আমরা নতুন করে ভাবতে পারব।’
সেই দমনের কাজটাই করে এই মৃদু বিদ্যুৎপ্রবাহ। ষাটজনের উপরে এই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। দেখা গেছে, বহু কঠিন সমস্যার সমাধান তাঁরা করতে পেরেছেন এই বিদ্যুৎ সরবরাহের পরে।
পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্টিফিক’ নামের এক জার্নালে। তবে এ বিষয়ে এখনও আরও গবেষণা প্রয়োজন, এমনটাই মত তাঁদের।