ছাত্রলীগ নেতার হামলায় আহত সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের শারীরিক অবস্থার কিছু উন্নতি হয়েছে। আগামীকাল সোমবার তাঁর ডান হাতে অস্ত্রোপচার করা হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
খাদিজাকে তত্ত্বাবধানকারী স্কয়ার হাসপাতালের কনসালট্যান্ট রেজাউস সাত্তার গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ধারালো অস্ত্রের কোপ ঠেকানোর সময় খাদিজার হাতের একাধিক স্থান কেটে গেছে। এ কারণে গতকাল হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জনরা খাদিজার ডান হাতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী সোমবার এই অস্ত্রোপচার করা হবে।
রেজাউস সাত্তার জানান, খাদিজার জ্ঞান না ফিরলেও নাম ধরে ডাক দিলে কিঞ্চিৎ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছেন। এ কারণে গতকাল খাদিজাকে আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) থেকে চিকিৎসকদের বিশেষ তত্ত্বাবধানে থাকা হাইডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তাঁর অবস্থার আরও উন্নতি হবে। তবে খাদিজার অবশ বাঁ হাত ও পা নিয়ে চিকিৎসকেরা উদ্বিগ্ন।
খাদিজার বড় ভাই শাহীন আহমেদ গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকালে খাদিজাকে দেখার পর একজন অর্থোপেডিক সার্জন তাঁদের জানিয়েছেন, অবশ হওয়া বাঁ হাত ও পা ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। আর ভালো হলেও অনেক সময় লাগবে। তিনি বলেন, আক্রান্ত হওয়ার পর সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খাদিজার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তখন আক্রান্ত ডান হাতটিতে কয়েকটি সেলাই করে দেওয়া হলেও অস্ত্রোপচার করা হয়নি। স্কয়ার হাসপাতালের অর্থোপেডিক চিকিৎসকেরা আগামী সোমবার খাদিজার ডান হাতে অস্ত্রোপচার করবেন। চিকিৎসক খাদিজার পরিবারকে বলেছেন, এই অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি কম এবং প্রয়োজন না হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হবে না।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম গত ৩ অক্টোবর সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা বেগমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। তঁাকে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে অচেতন অবস্থায় ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে ৪ অক্টোবর খাদিজার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। তখন থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। তবে এখনো তাঁর জ্ঞান ফেরেনি।
হামলার পর আটক বদরুল এখন কারাগারে আছেন।