বয়স তার পাঁচ বছরও হয়নি। তারপরও ভর্তি হয়ে গেল নবম শ্রেণিতে! হ্যাঁ, নীতিগত বাধার গেরো পেরিয়ে অবশেষে এই বয়সেই আনুষ্ঠানিকভাবে সরাসরি নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে সেই অবিশ্বাস্য প্রতিভার শিশু অনন্যা ভার্মা।
ভারতের উত্তর প্রদেশের লখনৌ শহরের অনন্যা গতকাল সোমবার শহরের সেন্ট মিরাস স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। এ জন্য তাকে অনুমতি নিতে হয় শিক্ষা বিভাগ থেকে। ভর্তির দিন তার বয়স ছিল ৪ বছর ৮ মাস ২১ দিন। আরও এই বয়সে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ায় লিমকা বুক অব রেকর্ডসে নাম উঠেছে তার।
অনন্যাকে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করানোর অনুমতি দেওয়া জেলার স্কুল পরিদর্শক উমেশ ত্রিপাঠী বলেন, ‘অনন্যা এতই মেধাবী যে তাকে এই বয়সেই নবম শ্রেণিতে ভর্তি করানো ঠেকানো যায়নি। সে এখনই অনর্গল হিন্দিতে কথা বলতে পারে এবং নবম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকও গড়গড় করে পড়তে পারে। তাই সে এই নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার যোগ্য।’
অনন্যার নবম শ্রেণিতে ভর্তির ঘটনা শুনে অনেকে বিস্মিত হলেও তার পরিবারের কাছে বিষয়টি বিস্ময়ের কিছু নয়! কারণ, তার বড় দুই ভাই-বোনের গল্পটাও ঠিক একই ধরনের। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ২০০৭ সালে অনন্যার ভাই শৈলেন্দ্র কম্পিউটার বিজ্ঞানে দেশের কনিষ্ঠতম স্নাতক ডিগ্রিধারী হয়ে সাড়া ফেলে দেয়। আর তার বোন সুষমা মাত্র ৭ বছর ৩ মাস ২৮ দিন বয়সেই দশম শ্রেণি পাস করে।
এই প্রতিভার কারণে ২০০৭ সালে লিমকা বুক অব রেকর্ডসে নিজের নামও লিখিয়ে নিয়েছিল সুষমা। তিন বছর আগে সে বিএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন করেছে। আর গত বছর মাত্র ১৫ বছর বয়সে সে পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হয়েছে।
তবে সুষমার রেকর্ড হুমকিতে ফেলেছে অনন্যা! আর দুই বছর পরই দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা দেওয়ার কথা অনন্যার। তখন তার বয়স হবে ছয় বছর। যদি সে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, তাহলে বোন সুষমার রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়বে।
অনন্যার জন্ম ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর। তার বাবা তেজ বাহাদুর এখন বাবাসাহেব ভিমরাও আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী সুপারভাইজার (স্যানিটেশন) পদে চাকরি করেন। মা ছায়া দেবী পড়তে বা লিখতে পারেন না।
তেজ বাহাদুর বলেন, ‘অনন্যার বয়স যখন ১ বছর ৯ মাস, তখনই সে রামায়ণ পড়তে পারত। আমরা কখনোই পড়াশোনার জন্য তাকে চাপ দিইনি। আমাদের সন্তানদের জন্য আমরা গর্বিত।’