আজকের বাংলা তারিখ
  • আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১৮ই জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সন্ধ্যা ৭:২১

ঢাকা ওয়াসায় বেতনের দ্বিগুণ ওভারটাই

ঢাকা ওয়াসার প্রায় সাড়ে তিন হাজার কর্মচারীর গত অর্থবছরে মূল বেতন ছিল প্রায় ২৭ কোটি টাকা। আর তাঁরা এ সময়ে ওভারটাইমই (ওটি) নিয়েছেন প্রায় ৫৬ কোটি টাকা, যা অবিশ্বাস্য। কারণ, নিয়মানুযায়ী ওভারটাইম কখনো মূল বেতনের বেশি হতে পারবে না।
২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এ হিসাবটি ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে। ঢাকা ওয়াসায় শুধু কর্মচারীরাই ওভারটাইম পান। এখানে প্রায় চার শ কর্মকর্তা থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা ওভারটাইম পান না।
নতুন বেতনকাঠামো অনুযায়ী ওভারটাইম বাবদ অর্থ অনেক বেড়েছে। আর এই বাড়তি অর্থ আদায়ের জন্য ওয়াসার কর্মচারীরা নিয়মিত মিছিল করছেন।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন কর্মচারীর সারা মাসে অফিস সময় ধরা হয় গড়ে ১৭৫ ঘণ্টা। এটা ধরেই তাঁদের ঘণ্টায় বেতন হিসাব করা হয়। সাধারণ কর্মচারীরা শ্রম আইন অনুযায়ী অতিরিক্ত কাজের জন্য মূল বেতনের দ্বিগুণ পান। তবে ১৯৮০ সালে সরকারি আদেশ অনুযায়ী ছুটির দিনসহ গাড়িচালকদের মাসে সর্বোচ্চ আড়াই শ ঘণ্টা ওভারটাইম দেওয়া যায়। তবে তা কখনোই মূল বেতনের বেশি হতে পারবে না। প্রভাবশালী গাড়িচালকেরা এটা না মেনে দ্বিগুণ, তিন গুণ ওভারটাইম দাবি করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গত মঙ্গলবার ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। লিখিত প্রমাণপত্রের ভিত্তিতে জানতে চাওয়া হচ্ছে, এমন বলা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারব না। তবে প্রবিধানমালার বাইরে কেউ ওভারটাইম নিলে অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গাড়িচালক, অপারেটরদেরই বেশি ওভারটাইম: অভিযোগ রয়েছে, অনেক গাড়িচালক প্রকৃত শ্রমের অতিরিক্ত ওভারটাইম দাবি করেন। পাম্প¬অপারেটররা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মূল কমর্ঘণ্টা আট ঘণ্টার চেয়ে ওভারটাইম দ্বিগুণও দেখান। ওয়াসার বেশির ভাগ পাম্প অপারেটরের মূল বেতন গত অর্থবছরে ছিল ৮ হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু তাঁরা ওভারটাইম পেয়েছেন দ্বিগুণেরও বেশি। নতুন বেতনকাঠামোয় মূল বেতন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ওভারটাইম বেড়েছে আরও অনেক বেশি।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) গাড়িচালক মাধব গোপাল মজুমদারের মূল বেতন বর্তমানে ২০ হাজার ৪২০ টাকা হলেও গত জুলাই মাসে তাঁর ওভারটাইম হয়েছে ৬১ হাজার ১৫ টাকা। তিনি ২৬০ ঘণ্টার ওভারটাইমের হিসাব দেন।

পাম্প¬অপারেটর কাজী মজিবুর রহমান ও রফিকুল ইসলামের মূল বেতন ১৮ হাজার ৮৬০ টাকা, ওভারটাইমও করেছেন ৩৬০ ঘণ্টা। ওভারটাইম বিল হচ্ছে ৭৮ হাজার ৩১ টাকা। চালক ও অপারেটরদের মধ্যে অনেকে কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সদস্য। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে গাড়িচালক ও পাম্প¬অপারেটরদের মূল বেতনের তুলনায় ওভারটাইম অনেক বেশি হয়েছে, যা তাঁদের দাখিল করা বিলে দেখা যায়।

গত অর্থবছরে শিক্ষানবিশ পাম্প¬অপারেটর হাবিবুল ইসলাম ও ওসমান গনির মূল বেতন ছিল প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা। জুলাই মাসে মূল বেতন হয়েছে ১৩ হাজার ৭৮ টাকা। বিল করেছেন যথাক্রমে ৪৩ হাজার ৭২ ও ৪৫ হাজার ৬০৬ টাকা। শিক্ষানবিশ পাম্প¬অপারেটর মো. সোরয়ার্দী, জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজাউল করিম, শাহাবুদ্দীন ও আরিফুল আলমের মূল বেতন ১৩ হাজার ৭৮০ টাকা। কিন্তু সবার ওভারটাইম একই টাকার অঙ্কের ৪৪ হাজার ৩৩৯ টাকা ৪৩ পয়সা। সবাই ২৮০ ঘণ্টার ওভারটাইম দেখিয়েছেন।

হিসাব বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্ভবত তাঁরা একজনের বিল দেখে অন্যজন তৈরি করেছেন, যার জন্য ওভারটাইম ঘণ্টার ও টাকার অঙ্কে পুরো মিল রয়েছে। তবে ওয়াসার কিছু কর্মকর্তা চালকদের সার্বক্ষণিকভাবে ব্যবহার করেন, এ জন্য তাঁদের ওভারটাইম বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু সব কর্মকর্তা সার্বক্ষণিকভাবে চালকদের ব্যবহার করেন না, এ তথ্যেরও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কর্মচারীরা ওভারটাইম পেতে পারেন, তা তাঁদের প্রাপ্য। কিন্তু তাতে জবাবদিহি থাকতে হবে। মূল বেতনের চেয়ে ওভারটাইম যদি বেশি হয় বা বাস্তবতার সঙ্গে মিল না থাকে, তা গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা নয়। সপ্তাহে দু-এক দিন বেশি কাজ হতে পারে। কর্মচারীদের জনবলের ঘাটতি পূরণ হলে ওভারটাইম কমে আসে। কর্মচারী ইউনিয়নের প্রভাব দূর করে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা জোরদার করে ওভারটাইমের অস্বাভাবিকতা দূর করা সম্ভব।

ওয়াসার প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশেষ করে ওয়াসার গভীর নলকূপের পাম্পস্টেশনগুলোতে লোকবল কম। প্রতি মাসেই পাম্পের সংখ্যা বাড়ে, কিন্তু সে হারে লোক বাড়ে না। প্রায় সাড়ে ৭০০ স্টেশনে লোক রয়েছে দেড় হাজারের মতো। দরকার প্রায় দুই হাজার। এ জন্য ওভারটাইম প্রয়োজন হয়। তবে ওয়াসার হিসাবে অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো পাম্প সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকে না। ওয়াসার জনপথ, মতিঝিল, হাতিরপুল, মিরপুরের কাজীপাড়া, কাফরুলসহ কয়েকটি পাম্পস্টেশনে গিয়ে এর সত্যতাও পাওয়া যায়।

ঢাকা ওয়াসার সাবেক এমডি আজহারুল হক এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওয়াসায় লোকবল কিছু কম আছে। তবে সে দোহাই দিয়ে সরকারি আদেশ না মেনে প্রকৃত কাজের চেয়ে অতিরিক্ত ওভারটাইম দেখানোও ঠিক না। যদিও আমার কার্যকালে (১৯৯৬-২০০৩) তা সম্ভব হয়নি। প্রায় ৪০০ পাম্প ছিল। ওভারটাইম বিল বেশি হওয়ায় মূল কাজ ও অতিরিক্ত কাজের বাস্তব হিসাব চেয়েছিলাম। তার জন্য সমস্যায়ও পড়তে হয়েছিল।’

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, একজন মানুষ কত ওভারটাইম করতে পারে? মানুষের কর্মক্ষমতা বা শারীরিক ক্ষমতার সীমা আছে। এটা ভীষণভাবে দেখা দরকার। ওয়াসার লোকজন যে পাম্পগুলো চালান, সেগুলো চালানোর জন্য ‘বিদ্যুৎ নেই’ বলে ডিজেলে চালান। বিদ্যুৎ বিভাগে খবর নিলে সঠিক ঘটনা বেরিয়ে আসে। তিনি বলেন, এক-এগারোর পর এই দুর্বৃত্ত চক্রকে ধরা হয়েছিল। তারা আবার শুরু করেছে।

MY SOFT IT Wordpress Plugin Development

Covid 19 latest update

# Cases Deaths Recovered
World 0 0 0
Bangladesh 0 0 0
Data Source: worldometers.info

Related News

সানির ব্যাটারি বিপ্লব

সানি সানওয়ার কাজ করেন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ নিয়ে। স্বপ্ন দেখেন কার্বন নিঃসরণমুক্ত বিদ্যুৎ–ব্যবস্থার। ...

বিস্তারিত

অনলাইনে ব্যবসা করতে চান?

ধরুন আপনার অসাধারণ কিছু প্রোডাক্ট আছে। খুব সুন্দর করে কন্টেন্ট তৈরী করে নিজের ওয়েবসাইট সাজিয়েছেন। পণ্যের ছবি ...

বিস্তারিত

হলোগ্রাফি এবং পদার্থবিজ্ঞানের মেসি

আজকে যে বিষয়টা দিয়ে আলোচনা শুরু করতে চাই, সেই ধারণাটার জন্ম স্ট্রিং তত্ত্ব থেকে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এর ...

বিস্তারিত

ফেসবুক ছাড়ার বার্ষিক গড় মূল্য ১ হাজার ডলার

ফেসবুক ব্যবহারের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি প্রায় সবাই জানেন। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্যের ...

বিস্তারিত