পৃথিবীর মতোই আরও সাত গ্রহ! কোথায় এদের বাস? কী বলছে নাসা?
পৃথিবী থেকে ৪০ আলোক বর্ষ দূরে ৭ গ্রহের খোঁজ মিলেছে। এমনই দাবি করল নাসা। এই গ্রহগুলির আকৃতি পৃথিবীর মতোই। বামন আকারের একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে এই ৭ গ্রহ। এই নক্ষত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ট্র্যাপিস্ট ওয়ান। নাসা জানিয়েছে, পৃথিবীর আকারে থাকা এই ৭ গ্রহের মধ্যে তিনটি গ্রহের চারপাশে যে বায়ুমণ্ডল আছে, তার সঙ্গে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অনেকটাই মিল রয়েছে।
পৃথিবীর মতো অন্য গ্রহের খোঁজে গত কয়েক দশক ধরেই মহাকাশ অভিযানে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই মঙ্গলের বুকে প্রাণের স্পন্দনেরও খোঁজ চলছে। এমনকী, চাঁদে কোনওভাবে মানুষের উপযোগী বসতি স্থাপন করা যায় কি না তা নিয়েও চলছে পরীক্ষা-নিরিক্ষা।
নাসার এই ঘোষণা ভিন গ্রহের প্রাণের স্পন্দনের খোঁজে এক নতুন দিশা দেখাতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ট্র্যাপিস্ট ওয়ান থেকে ৭ গ্রহের মধ্যে দূরত্ম নামমাত্র। অনেকটা সূর্য এবং মঙ্গলের মধ্যে যতটা দূরত্ম, ট্র্যাপিস্ট ওয়ান ও তার ৭ গ্রহ একে অন্যের থেকে তার থেকেও অনেক কম দূরত্বে কক্ষপথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নাসা জানিয়েছে, গ্রহগুলির মধ্যে দূরত্ব এতটাই কম যে একটি গ্রহ থেকে পাশের গ্রহের বায়ুমণ্ডলকে খালি চোখেই প্রত্যক্ষ করা যায়।
২০১৬ সালের মে মাসে চিলি থেকে ট্র্যানজিটিং প্ল্যানেটস অ্যান্ড প্ল্যানেটেসিম্যালস স্মল টেলিস্কোপ বা ট্র্যাপিস্ট-এর মাধ্যমে প্রথমে ৩ গ্রহের সন্ধান মেলে। এরপর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বিভিন্ন মহাকাশ দূরবিক্ষণ কেন্দ্র থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। শেষমেশ ইউরোপিয়ান সাদার্ন অবজারভেটোরি কেন্দ্রের বৃহদাকার স্পেস টেলিস্কোপ স্পিৎজা তিনটি নয় পৃথিবীর আকারের ৭ গ্রহের কথা নিশ্চিত করে।
নাসা জানিয়েছে, পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষায় বোধ হচ্ছে, ৭ গ্রহ ট্র্যাপিস্ট ওয়ান নামে যে তারাকে প্রদক্ষিণ করছে তা পাথুরে জমিতে ভর্তি এবং সেখানে তরলাকারে প্রচুর পরিমাণে জলও আছে। এমনকী, ট্র্যাপিস্ট ওয়ান-এর তিন গ্রহেও পাথুরে জমি এবং জল থাকার সম্ভাবনা প্রবল বলেই তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে নাসা।
১৪ বছর আগে মহাকাশে তারা এবং গ্রহের কাজে নিযোজিত হয়েছিল স্পিৎজা টেলিস্কোপ। এই প্রথম এই টেলিস্কোপ দিয়ে এতবড় আবিষ্কার হল বলে জানিয়েছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যালটেকে নাসার স্পিৎজা সায়েন্স সেন্টারের ম্যানেজার শন ক্যারি। পৃথিবীর আকারের ৭ গ্রহের এই আবিষ্কার এক ঐতিহাসিক আবিষ্কার বলেও নাসা দাবি করেছে। এই প্রথম মহাকাশে তারার খোঁজে সৌরজগতের বাইরে একসঙ্গে পৃথিবীর আকারের ৭ গ্রহের খোঁজ পাওয়া গেল।