মানুষের কল্যাণে সব অর্থ খরচ করতেন মা : প্রধানমন্ত্রী
‘নিজের সম্পদও দেশের জন্য দিয়ে দিয়েছিলেন আমার মা’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ”আমার মা একটি টাকাও খরচ করতেন না, জমিয়ে রাখতেন। পরে সেসব টাকা বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দিতেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কার্যক্রম, আন্দোলন-সংগ্রাম আর মানুষের কল্যাণে সেসব অর্থ কাজে লাগিয়েছেন।” বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ”আগস্ট মাস, শোকের মাস। আর এ মাসেই আমার ছোট ভাই শেখ রাসেলও জন্মগ্রহণ করেছিল। আবার এই মাসেই আমার পরিবারের সদস্যদের ঘাতকরা গুলি করে হত্যা করে।”
১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই মহিয়সী নারী। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নেপথ্যে থেকে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুপ্রেরণা ও সাহস দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবও কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ”মানুষ মন্ত্রিত্বের জন্য দল ছাড়েন আর বাবা দলের জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন। কিন্তু আমার মা সেটি নিয়ে কোনো অনুযোগ করেননি। বরং তার সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছেন, উৎসাহ যুগিয়েছেন। বাবা জীবনে বড় বড় ঝুঁকি নিয়েছেন, সব সময় মা প্রেরণা দিয়েছেন। বাবা অধিকাংশ সময় জেলে থাকতেন আর আন্দোলন-সংগ্রামে নেতাকর্মী ও ছাত্রদের পরামর্শ-নির্দেশনা দিতেন মা। রাজনৈতিকভাবে অনেক সচেতন ছিলেন তিনি।”
বঙ্গমাতাই বোধ হয় সবচেয়ে আগে জানতেন, এই দেশ একদিন স্বাধীন হবে। এ জন্য তিনি কোনোদিন করাচিতে যাননি, যেতেও চাননি। এমনকি ভুট্টো ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবার কাছে এলে মা তার সঙ্গে দেখাও করেননি। মা বলেছিলেন, ওদের সঙ্গে থাকবো না, দেখা করবো কেন? এভাবেই স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী হিসেবে বঙ্গমাতার অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ”তার দূরদর্শিতাই আমাদের স্বাধীনতার পথ খুলে দিয়েছিল।”
Like this:
Like Loading...