হিন্দু নারীর জীবন বাঁচাতে মুসলিম নারীর কিডনি দান
ভারতে শামসাদ বেগম (৪০) নামে এক মুসলিম নারী আরতি (৩৮) নামের আরেক হিন্দু নারীকে কিডনি দান করছেন।
দেশটির সম্প্রতি গরু খাওয়া নিয়ে মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের মধ্যে উত্তর প্রদেশের ওই নারীর কিডনি দানকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যন্য নজির হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ফতেহপুর জেলা থেকে শামসাদ বেগম কিডনি দিতে মহারাষ্ট্রের পুনেতে গেছেন। সেখানে দু’জনকেই চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।
শামসাদ বেগম কিডনি দানের ইচ্ছাপত্রসহ যাবতীয় নথিপত্র ফতেহপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে জমা দিয়েছেন। এখন সরকারের অঙ্গদান অনুমোদন কমিটির সায় পেলেই পরবর্তী কার্যক্রম চালাবেন চিকিৎসকরা।
শামসাদের ছোট বোনের বান্ধবী আরতির দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এক বছর ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
তার ডায়লাইসিসি চলছে, যা দেখে নিজের কিডনি দিয়ে বোনের বান্ধবীকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন শামসাদ বেগম।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তার (আরতি) শারীরিক কষ্ট দেখে আমি আর থাকতে পারিনি, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করিয়ে দেখি আমার আর তার রক্তের গ্রুপ একই। এখন আমি কিডনি দেয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।’
শামসাদ বেগম বলেন, ‘ধর্ম দিয়ে নয়, মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে চেয়েছি। তাই একজন মানুষের জন্য আমার এই ত্যাগ।’
১০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর ফতেহপুরের রাঢ়িবুজুর্গ গ্রামে বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন শামসাদ বেগম। তার ছোট বোন থাকেন মহারাষ্ট্রের পুনেতে, সেখানে গিয়ে আরতিকে দেখেন শামসাদ।
মেয়ের সিদ্ধান্তে কোনো আপত্তি করেননি শামসাদের বাবা জাকির খান। তিনি বলেন, ‘সব প্রক্রিয়া শেষ। দুই পরিবারও রাজি। এখন সরকারি কমিটির অনুমোদন পেলেই হয়।’
প্রত্যেক মানুষের দুটি কিডনি থাকলেও একটি কিডনি নিয়েই বেঁচে থাকা সম্ভব।
ফতেহপুরের জেলার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. বিনয় কুমার বলেছেন, তারা শামসাদ বেগমের সব কাগজপত্র স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিটিতে পাঠিয়েছেন, এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
Like this:
Like Loading...